সিলেটের ফুটবল তারকা হামজা চৌধুরীর ঐতিহাসিক যাত্রা: বাংলাদেশের হয়ে খেলবেন
বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে খেলার অনুমতি পেয়েছেন ইংল্যান্ডের প্রিমিয়ার লিগে খেলা তারকা ফুটবলার হামজা চৌধুরী। ফিফার ফুটবল ট্রাইব্যুনালের প্লেয়ার স্ট্যাটাস চেম্বার থেকে ছাড়পত্র পাওয়ার পর এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) এক আনুষ্ঠানিক বার্তায় বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। হামজার অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলের ইতিহাসে একটি নতুন অধ্যায় রচনা করতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
হামজার এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিত হওয়ার পর তার ক্লাব লেস্টার সিটি তাদের ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট শেয়ার করেছে। পোস্টে হামজাকে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। ক্লাবটি লিখেছে, “হামজা চৌধুরী এখন বাংলাদেশের গর্ব।” এটি প্রিমিয়ার লিগের একজন ফুটবলারের প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলার ঘটনা, যা বাংলাদেশের ফুটবলকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নতুন পরিচিতি দিতে পারে।
বাফুফে প্রকাশিত এক ভিডিও বার্তায় হামজা তার অনুভূতি প্রকাশ করে বলেন, “আমি অত্যন্ত গর্বিত এবং খুশি। বাংলাদেশের হয়ে খেলার জন্য তর সইছে না। আশা করি, শিগগিরই আপনাদের সামনে মাঠে নামতে পারবো।” ২৭ বছর বয়সী এই ফুটবলারের মা বাংলাদেশি এবং বাবা গ্রানাডার নাগরিক। যদিও হামজার শেকড় বাংলাদেশের সিলেটের হবিগঞ্জে, তিনি বেড়ে উঠেছেন ইংল্যান্ডে। তার পারিবারিক পটভূমির কারণে তিনি বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড এবং গ্রানাডা—এই তিনটি দেশের জাতীয় দলে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিলেন।
ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে খেলার অভিজ্ঞতা থাকায় হামজার জাতীয় দলে খেলার ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দেয়। ফিফার নিয়ম অনুযায়ী, তাকে বিশেষ ছাড়পত্র নিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন তিনি ইংল্যান্ডের জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখলেও শেষ পর্যন্ত নিজের শেকড়ের টানে বাংলাদেশের হয়ে খেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
হামজার অন্তর্ভুক্তি বাংলাদেশের ফুটবলপ্রেমীদের মধ্যে আশার সঞ্চার করেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, প্রিমিয়ার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জাতীয় দলের খেলায় নতুন মাত্রা যোগ করবে। হামজার মতো একজন তারকা দলে থাকলে তরুণ খেলোয়াড়দের অনুপ্রাণিত করার পাশাপাশি দলীয় পারফরম্যান্সেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। তার স্ট্র্যাটেজি এবং দক্ষতা দলের জন্য একটি মূল্যবান সংযোজন হতে পারে।
বাংলাদেশের ফুটবল ইতিহাসে এটি এক যুগান্তকারী মুহূর্ত হিসেবে ধরা হচ্ছে। হামজার মতো খেলোয়াড়ের উপস্থিতি শুধু জাতীয় দলকেই নয়, বরং দেশের ফুটবল সংস্কৃতিকেও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। তার অভিজ্ঞতা ও নেতৃত্ব বাংলাদেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ফোকাস এখন তার মাঠে পারফরম্যান্সের দিকে।
হামজা চৌধুরীর অন্তর্ভুক্তি দেশের ফুটবলের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। ফোকাস থাকবে তার অভিজ্ঞতা, নেতৃত্ব এবং দলের উন্নয়নে তার অবদানের দিকে।