ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে আরও ৪৯ জন এবং লেবাননে ৩৮ জনকে হত্যা করেছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
সোমবার (১১ নভেম্বর) সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়।
এতে বলা হয়, ইসরায়েলি বাহিনী গাজা ভূখণ্ডজুড়ে রোববার অন্তত ৪৯ ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে শুধু উত্তর গাজার জাবালিয়াতে একটি হামলায় ৩৬ জন নিহত হয়েছেন।
গত বছরের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের অবিরাম বিমান ও স্থল হামলায় এখন পর্যন্ত ৪৩ হাজার ৬০৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। যাদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। এ ছাড়া আহত হয়েছেন এক লাখেরও বেশি মানুষ।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি বাহিনী গত ২৪ ঘণ্টায় লেবাননে আরও ৩৮ জনকে হত্যা করেছে। এর মধ্যে রাজধানী বৈরুতের উত্তরে আলমাত গ্রামে হামলায় ২৩ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭ শিশু রয়েছে।
চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর থেকে লেবাননজুড়ে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। দখলদারদের দাবি, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর অপারেটিভস, অবকাঠামো এবং অস্ত্রাগারকে লক্ষ্য করে এই হামলা চলছে। ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত তিন হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। হিজবুল্লাহর পাল্টা হামলায়ও প্রায় শতাধিত ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছে।
এদিকে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর বিমনা হামলা চালিয়ে লেবাননের সশস্ত্র সংগঠন হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যা করে ইসরায়েল। প্রতিশোধ হিসেবে ১ অক্টোবর রাতে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ২০০ ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ইরান। বলা হয়, হিজবুল্লাহর প্রধান সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী দেশ ইরান।
এমন উত্তেজনার মধ্যেই গত ১৬ অক্টোবর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান নেতা ইয়াহিয়া সিনওয়ারকে হত্যা করে দখলদার ইসরায়েল। এর দুইদিন পর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাসভবনে ড্রোন হামলা চালায় হিজবুল্লাহ। তবে হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এ ঘটনায় গত ২২ অক্টোবর হিজবুল্লাহর প্রয়াত প্রধান হাসান নাসরুল্লাহর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হাশেম সাফিউদ্দিনকে হত্যা কথা জানায় ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, গত বছরের অক্টোবরে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মিত্র হামাসের সমর্থনে ইসরায়েলে নানা সময় ছোট আকারে হামলা করেছে হিজবুল্লাহ। কিন্তু চলতি বছরের মে মাসে ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় মারা যান। অনেকের ধারণা এর পেছনে ইসরায়েলের হাত রয়েছে। রাইসির মৃত্যুর এক মাস পরই (জুলাই) ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস প্রধান ইসমাইল হানিয়াকে ‘গুপ্ত হামলা’ চালিয়ে হত্যা করে ইসরায়েল। এরপর থেকেই ইসরায়েলে ধারাবাহিক হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ।