ভালোবাসার মানুষকে পাশে রাখার স্বপ্ন নিয়ে লড়ছেন মাত্র ২২ বছরের এক তরুণী, হাসনা আক্তার। বাংলাদেশি স্বামী আলামিনকে যুক্তরাজ্যে আনতে গিয়ে তিনি এখন সপ্তাহে ৭০ ঘণ্টা পর্যন্ত কাজ করছেন। তবুও ব্রিটিশ সরকারের নতুন ভিসা নিয়মের শর্ত পূরণ করতে পারছেন না।
হাসনার স্বামীর সঙ্গে পরিচয় হয় ২০১৮ সালে বাংলাদেশ সফরে গিয়ে। দীর্ঘ প্রেমের পর ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে তারা বিয়ে করেন। কিন্তু বিয়ের পর একসাথে থাকা যেন সহজ নয় – তাদের সামনে এখন বড় বাধা যুক্তরাজ্য সরকারের কড়া আয়–নিয়ম।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ব্রিটিশ নাগরিক যদি তার বিদেশি জীবনসঙ্গীকে যুক্তরাজ্যে আনতে চান, তাহলে তার বাৎসরিক আয় হতে হবে কমপক্ষে ২৯,০০০ পাউন্ড। অথচ, হাসনা একজন কেয়ার হোম কর্মী এবং অটিজম অনুশীলনকারী হিসেবে সপ্তাহে ৬০–৭০ ঘণ্টা কাজ করেও এই টার্গেট ছুঁতে পারছেন না।
এই কঠিন নিয়ম শুধু ডেমির নয় – হাজারো দম্পতির জীবনে এনে দিয়েছে দূরত্ব, কান্না, মানসিক চাপ। জন্মদিন, বিবাহবার্ষিকী, এমনকি বড়দিন বা ইস্টারেও তারা একসাথে থাকতে পারছেন না। অনেকেই শেষ চেষ্টা হিসেবে পর্যটন ভিসার আবেদন করেন, কিন্তু তা বেশিরভাগ সময়ই খারিজ হয়ে যায়।
হাসনা বলেন, “আমি আমার জীবনসঙ্গীর সঙ্গে থাকতেই তো এত পরিশ্রম করছি। কিন্তু এমন নিয়ম আমাদের এক হতে দিচ্ছে না।”
দাতব্য সংস্থা ‘Reunite Families UK’ এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই নিয়মগুলো তরুণদের জন্য একেবারেই বাস্তবতা-বিবর্জিত। তাদের মতে, শুধু টাকার অঙ্ক নয় – নীতির পেছনে থাকা মানবিক দিকটাও ভাবা উচিত।
তারা বলছেন, “পরিবার মানেই তো ভালোবাসা, সাহচর্য ও পাশে থাকা। এই কঠিন নিয়মগুলো সেটাকেই ভেঙে দিচ্ছে।”
এই ঘটনা প্রমাণ করে, সরকারের কাগুজে নীতির সঙ্গে বাস্তব জীবনের চাহিদার ফারাক কতটা বড় – এবং সেই ব্যবধানেই হারিয়ে যাচ্ছে অনেকের স্বপ্ন, অনেকের ভালোবাসা।