বিবাহ ইসলামের দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি সুন্নাত।হাদিসে বিবাহের অনেক ফজিলত ও গুরুত্ব বর্ণনা হয়েছে। রসুলুল্লাহ বলেছেন, হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যারা বিবাহের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিবাহ করে। আর যে সামর্থ্য রাখে না, সে যেন (নফল) সওম পালন করে।
রমজানে বিবাহ, বাগদান বা অন্যান্য বৈধ কর্মকাণ্ড জায়েজ। তবে এখানে মনে রাখতে হবে দিনে রোজা রাখা অবস্থায় স্বামী-স্ত্রীর মিলন হারাম। তবে রাতের সময়ে (ইফতার থেকে সুবহে সাদিক পর্যন্ত) এটি জায়েজ।
রমজানের পবিত্রতার দিকে লক্ষ্য রেখে এ মাসে বিবাহের আয়োজনে আমাদের একটু বেশি সতর্ক থাকা উচিত। যেসব বিষয় থেকে বিরত থাকতে হবে নিচে উল্লেখ করা হল।
গান-বাজনা
রমজানের বিবাহ অনুষ্ঠানে অবশ্যই গান-বাজনা থেকে বিরত থাকতে হবে। গান বাজনা কখনোই যায়েজ নয়। তবে রমজানে এমন গর্হিত কাজ একদিকে যেমন বড় ধরনের অপরাধ অন্যদিকে আমাদের আশপাশে যারা রোজা রেখেছেন তাদের জন্য কষ্টেরও কারণ।
অহেতুক আড়ম্বর
অনেক টাকা খরচ করে লোক দেখানোর জন্য অহেতুক আড়ম্বর ঠিক নয়। রমজানের পবিত্রতা বিবেচনায় বিবাহের অনুষ্ঠান যতোটা সম্ভব খুব সাদামাটা ও সহজ-সরল রাখা উচিত। রাসূলুল্লাহ বলেন, যে বিবাহ সহজ-সরল হয় এবং দেনমোহর কম হয় সেই বিবাহ উত্তম।
খাবারের অপচয়
আল্লাহ তাআলা কোরআনে বলেন, ‘অপচয়কারীরা শয়তানের ভাই। হাদিসে রাসূলুল্লাহ অপচয় করতে নিষেধ করেছেন। আজকাল বিবাহ অনুষ্ঠানের একটা সাধারণ চিত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে খাবারের অপচয়। মনে রাখতে হবে অপচয় বিবাহের বরকত নষ্ট করে দেয়।
বেপর্দা
পর্দা ইসলামের খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিধান। এই বিধানের দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। বিবাহ অনুষ্ঠান ঘরোয়াভাবে হোক বা কমিউনিটি সেন্টারে পুরুষ মহিলার জন্য ভিন্ন বসার জায়গা নির্ধারণ করলে এই বিধান সহজেই পালন করা সম্ভব। বিবাহ উৎসব যেন তেলাওয়াত, তারাবিহ বা অন্যান্য ইবাদতে বাধা না হয়ে দাঁড়ায়। রমজান মাসে যেহেতু বিবাহ অনুষ্ঠান ইফতারের পর অনুষ্ঠিত হয়। একারণে দেখা যায় যে, বিবাহ উৎসব করতে গিয়ে মাগরিব, ইশা ও তারাবির নামাজে আমাদের ব্যাঘাত ঘটে। অনুষ্ঠানে আগত সবাই যেন জামাতের সঙ্গে নামাজ পড়তে পারে সেদিকে খেয়াল রেখে রমজানে বিবাহের অনুষ্ঠানের সময় নির্ধারণ ও খুবই অল্প সময়ের মধ্যে সেটা শেষ করা ভালো।
পরিশেষে বলবো, রমজানের মূল উদ্দেশ্য হলো ইবাদত, তাকওয়া অর্জন ও আত্মসংযম। তাই বিবাহ অনুষ্ঠানে যেন গুনাহের কাজ, গান-বাজনা, আড়ম্বর বা অপচয়, রোজার ক্ষেত্রে বাধা এবং শরিয়তের সীমা লঙ্ঘন না হয় সেদিকে আমাদের বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।