সাউথপোর্টের একটি নাচের ক্লাসে ভয়াবহ হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত অ্যাক্সেল রুদাকুবানার বিরুদ্ধে আজ সাজা ঘোষণা করা হবে। ১৭ বছর বয়সে এই ভয়াবহ অপরাধ ঘটানোর দায়ে রুদাকুবানা সন্ত্রাসবাদসহ ১৬টি অভিযোগ স্বীকার করেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৯ জুলাই, সাউথপোর্টে একটি নাচের ক্লাসে। টেলর সুইফট থিমে আয়োজিত ক্লাসে রুদাকুবানা আকস্মিকভাবে হামলা চালান। এই নৃশংস ঘটনায় প্রাণ হারায় তিন শিশু—৯ বছরের অ্যালিস দা সিলভা আগুয়ার, ৬ বছরের বেবে কিং এবং ৭ বছরের এলসি ডট স্ট্যানকম্ব। হামলায় আরও আট শিশু গুরুতরভাবে আহত হয়, যাদের নাম আইনি কারণে প্রকাশ করা হয়নি।
রুদাকুবানা নাচের ক্লাসের প্রশিক্ষক এবং তাকে থামানোর চেষ্টা করা একজন প্রাপ্তবয়স্ককেও হত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
হামলার সময় রুদাকুবানার কাছে ২০ সেন্টিমিটার লম্বা ছুরি ছিল, যা তিনি অনলাইনে কিনেছিলেন। এছাড়া, তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ একটি প্রাণঘাতী রাসায়নিক রিসিন তৈরির উপাদান এবং চরম সহিংসতা সম্পর্কিত নথি উদ্ধার করেছে। এসব নথির মধ্যে ছিল যুদ্ধ, গণহত্যা, ক্রীতদাস প্রথা এবং চরম সহিংসতা নিয়ে বিভিন্ন উপকরণ।
পুলিশ জানিয়েছে, রুদাকুবানার “চরম সহিংসতার প্রতি গভীর আকর্ষণ” ছিল। তবে তার কোনো রাজনৈতিক বা ধর্মীয় মতাদর্শে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
নিহত এবং আহতদের পরিবার এই ঘটনার জন্য অভিযুক্তের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেছে। এক ভুক্তভোগী পরিবারের একজন বলেছেন, “অ্যাক্সেল তার শিকারদের প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখায়নি। সে যখন আমাদের সন্তানদের জীবনের প্রতি অবহেলা দেখিয়েছে, তখন তার জীবনও রক্ষা করার কোনো যুক্তি নেই। আমরা চাই, তাকে সারাজীবন কারাগারে কাটাতে হোক।”
রুদাকুবানার বয়স হামলার সময় ১৭ হওয়ায় তাকে সারাজীবন কারাদণ্ড দেওয়া নিয়ে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছে। সাধারণত এই ধরনের শাস্তি ২১ বছরের বেশি বয়সী অপরাধীদের জন্য আরোপ করা হয়। তবে ভুক্তভোগীদের পরিবার বলছে, এই মামলাটি ব্যতিক্রম হিসেবে বিবেচনা করা উচিত।
ঘটনাটি ব্রিটেনজুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। প্রধানমন্ত্রী এবং বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, একাকী এবং তরুণদের মধ্যে চরমপন্থার ঝুঁকি বাড়ছে। রুদাকুবানার মতো অপরাধীরা সহিংসতা এবং সন্ত্রাসবাদী মতাদর্শে প্রভাবিত হয়ে ভয়াবহ ঘটনা ঘটাচ্ছে।
আজ আদালতে রুদাকুবানার সাজা ঘোষণা করা হবে। ভুক্তভোগীদের পরিবার এবং পুরো দেশের নজর এখন আদালতের দিকে। ন্যায়বিচারের দাবিতে পরিবারগুলো আশা করছে, এমন ভয়াবহ অপরাধের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।