সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক ও প্রবাসী নেতা শহিদুল ইসলাম মামুন।
ছাত্রজীবনে মদন মোহন কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন মামুন। নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের সময় থেকেই তিনি বিএনপির রাজনীতিতে নিজেকে মেলে ধরেন। যুক্তরাজ্যে দীর্ঘদিন ধরে ফ্যাসিস্ট সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি প্রবাসেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
২০১৮ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগ সরকারের রোষানলে পড়ে কারাবরণ করেন শহিদুল ইসলাম মামুন। তিনি জানান, “৩৫ বছর ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। আন্দোলন সংগ্রামে সক্রিয় থাকার কারণে দেশে হামলা-মামলার শিকার হয়ে প্রবাসে যেতে বাধ্য হই। তবুও জাতীয়তাবাদের আদর্শ থেকে বিচ্যুত হইনি।”
শহিদুল ইসলাম মামুন জানান, তৃণমূলের নেতাকর্মীদের অনুরোধে এবং দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে তিনি সিলেট-৫ আসনে মনোনয়ন চান। তার ভাষায়, “দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয়, তবে জকিগঞ্জ-কানাইঘাট অঞ্চলের অবহেলিত জনগণকে উন্নয়নের স্রোতে যুক্ত করাই হবে আমার প্রধান লক্ষ্য। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার অগ্রগতি এবং প্রবাসে অর্জিত অভিজ্ঞতা দিয়ে আলোকিত করতে চাই এ জনপদকে।”
শহিদুল মামুনের পিতা এম এ হাফিজ সমছু ছিলেন জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির দুইবারের সভাপতি ও সিলেট জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি। পারিবারিকভাবেই বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এই নেতা মানবিক ও সামাজিক কাজেও সক্রিয় ছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী হেল্প সেলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, যা নির্যাতিত বিএনপি নেতাকর্মীদের সহায়তা করে থাকে।
জকিগঞ্জ-কানাইঘাটের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ শহিদুল মামুনকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চান। কানাইঘাট উপজেলা ছাত্রদলের নেতা ইমরান আহমদ বলেন, “আমরা এমন একজন প্রার্থী চাই, যিনি শুধু সুসময়ে নয়, দুঃসময়ে নেতাকর্মীদের পাশে ছিলেন।”
স্থানীয় বিএনপি নেতা জাকারিয়া বলেন, “শহিদুল মামুন শুধু নিজের এলাকার নেতাকর্মীদের নয়, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নির্যাতিতদের পাশে থেকেছেন। তার মতো একজন মানুষের প্রার্থিতা দলকে শক্তিশালী করবে।”
বয়োবৃদ্ধ আলতাব মিয়া বলেন, “জকিগঞ্জ-কানাইঘাট এলাকা বহুদিন অবহেলিত। যারা উন্নয়নের নামে লুটপাট করেছেন, এবার তাদের জবাব দেওয়ার সময় এসেছে।”
উল্লেখ্য, সিলেট-৫ আসনে দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি সরাসরি প্রার্থী দেয়নি। ১৯৯১ সালে হারিস চৌধুরী এ আসনে দলীয় প্রার্থী ছিলেন।১৯৯৬ সালে বিএনপি থেকে নির্বাচন করে পরাজিত হন এম এ মতিন। এরপর জোটগতভাবে এ আসন ছেড়ে দেওয়া হয় জামায়াত ও জমিয়তকে। তবে এবার দলীয় প্রার্থী দাবি করছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
এই আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় শহিদুল ইসলাম মামুন ছাড়াও রয়েছেন—সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন (চাকসু মামুন), যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মাহবুবুল হক চৌধুরী, যুক্তরাজ্য যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মঞ্জুরুল আশরাফ খান, আমিরাত বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন এবং প্রয়াত হারিস চৌধুরীর কন্যা ব্যারিস্টার সামিরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সিদ্ধান্তেই চূড়ান্ত প্রার্থী নির্ধারণ হবে। শহিদুল মামুন জানান, “দল যাকে যোগ্য মনে করবে, তার পক্ষেই আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।