গ্রীষ্মকালীন চাহিদা, ক্রু সংকট এবং বিমানবন্দরে যানজটের ফলে ইউরোপজুড়ে ব্যাপক ভ্রমণ বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। স্পেন, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ডসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে অন্তত ৩৭৮টি ফ্লাইট বিলম্ব এবং ২৪টি বাতিল হয়—মোট ৪০২টি ফ্লাইট বিঘ্নিত হয়।
এই পরিস্থিতির কারণে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ, এয়ার ফ্রান্স, লুফথানসা, এমিরেটস, ইউনাইটেড, ফিনএয়ার, কেএলএম, ইজিজেট এবং আরও বহু বিমান সংস্থা ব্যাপক সমস্যায় পড়ে। মূলত ২১টি প্রধান ইউরোপীয় বিমানবন্দর এই বিপর্যয়ের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল, যার মধ্যে ছিল লন্ডন গ্যাটউইক, মিউনিখ, ফ্রাঙ্কফুর্ট, আমস্টারডাম শিফোল, বার্সেলোনা ও চার্লস ডি গল।
ফ্লাইট বিঘ্নের দেশভিত্তিক চিত্র:
-
যুক্তরাজ্য: ৬৯টি ফ্লাইট বিলম্বিত, ৩টি বাতিল
-
জার্মানি: ৬৫টি বিলম্ব, ২টি বাতিল
-
স্পেন: ৬২টি বিলম্ব, ৫টি বাতিল
-
ফ্রান্স, ইতালি, সুইজারল্যান্ড: উল্লেখযোগ্য বিলম্ব
-
নেদারল্যান্ডস: ৮টি বাতিল (সবচেয়ে বেশি), প্রধানত শিফোলে
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বিমানবন্দর:
-
আমস্টারডাম শিফোল: ৩০টি বিলম্ব, ৮টি বাতিল (প্রধানত কেএলএম)
-
চার্লস ডি গল (প্যারিস): ৩৬টি বিলম্ব, ৩টি বাতিল
-
গ্যাটউইক (লন্ডন): ২৮টি বিলম্ব, ৩টি বাতিল
-
ফ্রাঙ্কফুর্ট: ২৯টি বিলম্ব, ২টি বাতিল
-
রোম ফিউমিসিনো: ৩০টি বিলম্ব
প্রধান ক্ষতিগ্রস্ত বিমান সংস্থা:
বিমান সংস্থা | বিলম্ব | বাতিল |
---|---|---|
ইজিজেট | ৪০ | ০ |
কেএলএম | ৬ | ৬ |
ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ | ৫ | ৩ |
ফিনএয়ার | ৫ | ১ |
ইউনাইটেড | ৬ | ২ |
এয়ার ফ্রান্স | ১৭ | ০ |
এমিরেটস | ২ | ০ |
বিশ্লেষকরা বলছেন, ইউরোপের বিমান চলাচল ব্যবস্থা দিন দিন আরও বেশি ভঙ্গুর হয়ে উঠছে। ক্রমবর্ধমান ভ্রমণ চাহিদা, অপর্যাপ্ত ক্রু ও সমন্বয়ের অভাবের ফলে পরিস্থিতি আরও নাজুক হয়ে পড়ছে। শুধু বড় বিমান সংস্থাই নয়, ছোট এবং আঞ্চলিক সংস্থাগুলিও সমস্যায় পড়েছে।
যাত্রীদের জন্য পরামর্শ:
-
ফ্লাইটের অবস্থা নিয়মিত চেক করুন
-
আগে থেকেই বিমানবন্দরে পৌঁছান
-
বিকল্প যানবাহন (যেমন ইউরোপিয়ান ট্রেন) বিবেচনায় রাখুন
-
ভ্রমণ বীমা বাধ্যতামূলক বিবেচনায় নিন
-
লাগেজ দেরি ও ফ্লাইট পুনঃবুকিংয়ের জন্য প্রস্তুত থাকুন
এই ঘটনা প্রমাণ করে যে, ইউরোপের বিমান চলাচল ব্যবস্থা শুধু চাপের মুখেই নয়, বরং মৌলিক কাঠামোগত সমস্যায় জর্জরিত। সামনের দিনগুলোতে এই খাতের জন্য এটা একটি সতর্কবার্তা হয়ে থাকবে।