প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম পারভেজ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্সের দুই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ক্যাপ্টেন মোবাশ্বের আলী খন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
বহিষ্কৃত দুই ছাত্রী হলেন—ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের ফাতেমা তাহসিন ঐশী ও ইংরেজি বিভাগের ফারিয়া হক টিনা। তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার (২১ এপ্রিল) সাময়িক বহিষ্কারের আদেশ জারি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট বিভাগের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি অভ্যন্তরীণ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দুই শিক্ষার্থীর সম্পৃক্ততার ইঙ্গিত পাওয়ায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
রেজিস্ট্রার মোবাশ্বের আলী বলেন, “প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অভিযুক্তদের বিষয়ে আমাদের কাছে চিঠি আসে। এরপরই আমরা প্রাথমিক তদন্ত শেষে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিই।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত চলাকালে প্রক্টোরিয়াল কমিটি বহিষ্কৃত দুই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। তাদের সরাসরি কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ফলে তদন্তের স্বার্থে এবং বহিরাগত পরিস্থিতি বিবেচনায় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাদের ছাত্রত্ব স্থগিত থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আরও জানিয়েছে, চূড়ান্ত তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অভিযুক্তদের স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একই সঙ্গে তদন্তে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে সব ধরনের তথ্য সরবরাহ করে সহযোগিতা করবে তারা।
এদিকে, প্রাইমএশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. রায়হানা বেগম জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তিনি বলেন, “পারভেজের পরিবারের পাশে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে ইতোমধ্যে ইউনিভার্সিটি অব স্কলার্স কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।”
পুলিশ ও মামলার এজাহার অনুযায়ী, পারভেজ চা-সিঙ্গাড়া খেতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গলিতে গিয়েছিলেন। সেখানে থাকা তিন ছাত্রীকে ‘হাসাহাসি’ করার অভিযোগে তারা তাদের বন্ধুদের ডেকে আনেন। প্রাথমিকভাবে বিষয়টি মীমাংসা হলেও অভিযুক্ত মাহাথি, মেহেরাব ও আবুজর গিফারী স্থানীয় কিছু যুবককে ডেকে এনে পারভেজের ওপর হামলা চালায়। দৌড়ে পালাতে গিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে পারভেজ আঘাতপ্রাপ্ত হন। দুর্বৃত্তরা তাকে বুকে-পিঠে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে পালিয়ে যায়।
ঘটনাটি বর্তমানে দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে এবং তদন্ত চলছে।