বাংলাদেশে বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনের ফলে দেশটিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের (অ্যাসাইলাম) আবেদন করা বাংলাদেশিদের অনিশ্চয়তা ও হতাশা বাড়ছে। বিচার বিভাগ মনে করছে, ‘ফ্যাসিবাদী’ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিরতা হ্রাস পেয়েছে এবং শান্তিতে নোবেল বিজয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
এই ধারণার প্রেক্ষিতে, অনেক বাংলাদেশি অ্যাসাইলামপ্রার্থীর আবেদন ইতিমধ্যেই খারিজ করে দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের ইমিগ্রেশন কোর্ট। ইন্টারন্যাশনাল বার অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক ও অভিজ্ঞ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী এবং ইমিগ্রেশন বিশেষজ্ঞ অ্যাটর্নি জান্নাতুল রুমা জানান, জুলাই-আগস্টে ঘটে যাওয়া রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর কোর্টের মধ্যে একটি ‘স্থির বিশ্বাস’ তৈরি হয়েছে যে বাংলাদেশে আর রাজনৈতিক নিপীড়ন নেই।
তারা আরও জানান, আবেদন জমা দেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই শুনানির তারিখ দেওয়া হচ্ছে—যা অতীতের দীর্ঘ অপেক্ষার বিপরীত। এতে করে আবেদনকারীরা চরম হতবাক ও উদ্বিগ্ন। কারণ, অনেক সময় আবেদন জমা দেওয়ার পর বছরের পর বছর অপেক্ষা করতে হতো শুনানির জন্য।
অ্যাটর্নি জান্নাতুল রুমা বলেন, “বর্তমান অ্যাসাইলাম মামলাগুলোতে ‘কান্ট্রি কন্ডিশন’ বা দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখনো উদ্বেগজনক। তা সত্ত্বেও বিচার বিভাগ অনেক সময় সঠিক তথ্য-প্রমাণের অভাবে সঠিক সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারছে না।”
অন্যদিকে, অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী জানান, অতীতে যেসব আবেদনকারীরা দাবি করেছিলেন যে দেশে ফিরে গেলে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হবেন, তাদের মামলাও এখন গুরুত্ব পাচ্ছে না। এতে করে যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বহু বাংলাদেশি উদ্বেগ ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছেন।