লন্ডনে সফররত প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সফরের শুরু থেকেই সম্ভাব্য এই বৈঠক নিয়ে আলোচনা চললেও, শেষ পর্যন্ত এমন কোনো সময়সূচি চূড়ান্ত হয়নি।
মঙ্গলবার (১০ জুন) সকাল ৭টায় ড. ইউনূস লন্ডনে পৌঁছান। একই দিন বিকেল ৪টায় এক সংবাদ সম্মেলনে তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়ে এখনো কোনো সময়সূচি নির্ধারিত হয়নি। অথচ সফরের সূচনালগ্ন থেকেই বলা হচ্ছিল, কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ড. ইউনূসের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন উঠলে শফিকুল আলম বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে কানাডা সফরে রয়েছেন। আজ এক ব্রিটিশ এমপি আমাদের জানিয়েছেন তিনি কানাডা ভিজিট করছেন।”
তবে প্রকৃত তথ্য হলো, কিয়ার স্টারমার এখনো যুক্তরাজ্যেই অবস্থান করছেন এবং তাঁর কানাডা সফর শুরু হবে ১৪ জুন, শনিবার থেকে। সে হিসেবে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি নিশ্চিত থাকা সত্ত্বেও, বৈঠকের কোনো কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
কূটনৈতিক প্রোটোকল অনুযায়ী, এ ধরনের উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক বাস্তবায়নে পূর্ব প্রস্তুতি, আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ এবং সময় নির্ধারণ অপরিহার্য। তবে, ইউনূস-স্টারমার বৈঠক ঘিরে এসব প্রচেষ্টা আদৌ গ্রহণ করা হয়েছিল কি না, তা স্পষ্ট নয়।
এ পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে—বাংলাদেশের সরকার প্রধানের সফরসূচি নির্ধারণে যুক্ত কর্মকর্তারা কি যথাযথ কূটনৈতিক রীতিনীতি অনুসরণ করেছেন? বিশেষ করে, বিদেশে অবস্থানরত একটি দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রদান কি শোভনীয়?
বিশ্লেষকদের মতে, কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে বৈঠকের সম্ভাবনা বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় সমন্বয় ও কূটনৈতিক প্রস্তুতির ঘাটতিই এই বৈঠক না হওয়ার অন্যতম কারণ। এখন দেখার বিষয়, লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশন কিংবা প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় বিষয়টি নিয়ে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেয় কি না।