সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের লামাকাজী বাজারে চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের হামলায় মো. মনোয়ার হোসাইন (২২) নামের এক তরুণ উদ্যোক্তা গুরুতর আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) রাত ১০টা ৩০ মিনিটের দিকে “লামাকাজী কম্পিউটার ও অনলাইন সার্ভিস” নামক তার নিজস্ব দোকানে মুখোশধারী ৫-৬ জন সন্ত্রাসী অতর্কিত হামলা চালায়।
আহত মনোয়ার হোসাইন উপজেলার ১ নম্বর লামাকাজী ইউনিয়নের সাংগিরাই গ্রামের বাসিন্দা এবং মো. আব্দুর রহিমের ছেলে। ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে একটি স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করেন। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বুধবার তিনি বাড়ি ফিরেছেন।
মনোয়ার জানান, হামলার সময় তিনি দোকানে একাকী কর্মরত ছিলেন। মুখোশধারী হামলাকারীরা দোকানে ঢুকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং অতর্কিতে তাকে মারধর শুরু করে। হামলাকারীরা দোকানে থাকা কম্পিউটার, প্রিন্টারসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতিও ভাঙচুর করে। তার চিৎকার শুনে আশপাশের ব্যবসায়ী ও পথচারীরা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়।
হামলার পেছনে রাজনৈতিক বিরোধের ইঙ্গিত দিয়ে মনোয়ার বলেন, তার বড় ভাই মো. ইফতেখার হোসাইন বর্তমানে কানাডা প্রবাসী এবং দেশে থাকাকালীন তিনি সিলেট-২ আসনের সাবেক এমপি প্রার্থী মোকাব্বির খানের নির্বাচনী প্রচারণার সাথে যুক্ত ছিলেন। সেই সময় স্থানীয় একটি চক্রের সাথে তার বিরোধের সূত্রপাত ঘটে। সেই বিরোধের জের ধরেই বর্তমানে তার পরিবারের উপর এ হামলা চালানো হয়েছে বলে মনোয়ারের দাবি। হামলাকারীরা পুনরায় হামলা ও তার ভাই দেশে ফিরলে হত্যার হুমকিও দিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
স্থানীয় একাধিক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, সম্প্রতি লামাকাজী বাজারে একাধিক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে চাঁদা দাবি ও হুমকির ঘটনা ঘটেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, “বাজারে এখন ব্যবসা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি।”
বিষয়টি জানার পর স্থানীয় ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ শাহনূর হোসাইন জানান, “ঘটনার পরপরই আমরা সব দোকান বন্ধ করে দিই। ভুক্তভোগীকে চিকিৎসা ও আইনি সহায়তার পরামর্শ দিয়েছি।”
বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এনামুল হক চৌধুরী বলেন, “ঘটনার বিষয়ে আমরা অবগত। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”