মিয়ানমারের ২২ ব্যক্তি ও ৪ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইইউ’র নিষেধাজ্ঞা
মিয়ানমারে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও ভয়াবহ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকায় দেশটির জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ফের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
দেশটির ২২ ব্যক্তি এবং ৪টি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এসব তথ্য জানায় ইউরোপিয়ান কাউন্সিল।
২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর সেখানকার চলমান গুরুতর পরিস্থিতি এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মিয়ানমারের ওপর চতুর্থ দফা নিষেধাজ্ঞা এটি।
মিয়ানমারের জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিজেদের ওয়েবসাইটে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, যে ২২ জনের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, জাতীয় প্রশাসনিক কাউন্সিলের একজন সদস্য, জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কয়েকজন সদস্য এবং সামরিক বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা রয়েছেন।
নিষেধাজ্ঞা দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর আর্থিক সম্পর্ক অথবা সেনাবাহিনীর শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
কোম্পানিগুলো হলো- এইচটু গ্রুপ, আইজিই (ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ অব এন্ট্রাপ্রেনিউরস), মাইনিং এন্টারপ্রাইজ ১ (এমই ১) এবং মায়নমা অয়েল অ্যান্ড গ্যাস এন্টারপ্রাইজ (এমওজিই)। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর চার ধাপে এখন পর্যন্ত ৬৫ জন ব্যক্তি ও ১০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করল ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এর মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় মোট ৬৫ ব্যক্তি এবং ১০টি প্রতিষ্ঠান অন্তর্ভুক্ত হলো। এই বিধিনিষেধের মাধ্যমে মিয়ানমারে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা স্থগিত এবং সামরিক সরকারের বৈধতা হিসেবে দেখা যায় এমন সব ধরনের সহায়তা বন্ধ হলো।
নিষেধাজ্ঞার তালিকায় যারা আছেন তাদের নাম এবং এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনি কার্যক্রম ইউরোপিয়ান কাউন্সিলের জার্নালে প্রকাশিত হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের পর দেশটির নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির অনেক রাজনৈতিক নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে এক বছরের বেশি সময় ধরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ চলছে। এই বিক্ষোভ-প্রতিবাদে জান্তার হাতে দেড় হাজারের বেশি বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে।