প্রশংসায় ভাসছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট
রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে গত দুদিন ধরে হামলা-পাল্টা হামলা চলছে। বৃহস্পতিবার ভোরে রাশিয়ান সৈন্যরা দেশটিতে ঢুকে পড়ে হামলা চালায়। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে একের পর এক বিস্ফোরণের পাশাপাশি দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়ংকর সংঘর্ষ চলছে। এছাড়াও কিয়েভের সামরিক ঘাঁটিতে হামলা করেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। পেরেমহি অ্যাভিনিউয়ে অবস্থিত ইউক্রেনের এ সেনাঘাঁটিতে শুক্রবার মধ্যরাত থেকে তুমুল যুদ্ধ চলছে।
এ পরিস্থিতিতে প্রাণ হারানোর আশঙ্কা থাকলেও দেশে ছেড়ে পালাননি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকলেও দেশবাসীকে শত্রুর মুখে ফেলে কোথাও যাবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। সামরিক পোশাকে রাস্তায়ও নেমেছেন তরুণ এ নেতা। এমন নেতৃত্ব ও সাহসিকতার কারণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন জেলেনস্কি।
শুক্রবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে কিয়েভের রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিকে দেশরক্ষার বার্তা দিতে দেখা যায়। এসময় তার পাশে ছিলেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী, চিফ অব স্টাফসহ ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা।
ভিডিওতে জেলেনস্কি বলেন, শুভ সন্ধ্যা। এখানে আমার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, আমি ও আমার উপদেষ্টারা রয়েছেন। আমরা সবাই এখানে আছি। আমাদের সৈন্যরা রয়েছেন। সঙ্গে আমাদের নাগরিকরাও রয়েছেন। আমরা আমাদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করব, দেশকে রক্ষা করব।
সন্ধ্যার দিকে রাজধানী কিয়েভে বেশ কটি বড় বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। কিয়েভ শহরের মেয়র ভিতালি ক্লিতশকো বিবিসিকে জানান, তিনি পাঁচটি বিকট বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পেয়েছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির মুখপাত্র জানিয়েছেন, অস্ত্রবিরতি দিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনায় বসতে তার দেশ প্রস্তুত রয়েছে। তিনি জানান, রাশিয়া ও ইউক্রেনের কর্মকর্তারা শান্তি আলোচনার স্থান ও সময় নির্ধারণে কথা বলছেন। তবে রাশিয়া অবশ্য বলে রেখেছে, ইউক্রেনের সব সৈন্য আত্মসমর্পণ করলেই আলোচনা হবে।
এদিকে, বিপদ জেনেও জেলেনস্কির কিয়েভে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে তাকে নিয়ে চলছে প্রশংসার জোয়ার। এমন সাহসীরাই ‘প্রকৃত নেতা’ বলে উল্লেখ করেছেন কেউ কেউ।
একসময় জনপ্রিয় কমেডিয়ান ছিলেন ভলোদিমির জেলেনস্কি। একটি টিভি শোতে তিনি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট সেজে অভিনয়ও করেছিলেন। সেটিই বাস্তবে রূপ নেয় ২০১৯ সালে। ৭৩ শতাংশ ভোট পেয়ে দেশটির সত্যিকারে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন এ নেতা।