রাশিয়ার নিন্দায় সরব ১৪১ দেশ
ইউক্রেনের ভেতরে ঢুকে লাগাতার স্থল, জল ও আকাশপথ দিয়ে আক্রমণ চালাচ্ছে রুশ বাহিনী। বুধবার জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক সীমান্তকে স্বীকৃতি দিয়ে দেশটির সার্বভৌমত্ব, স্বাধীনতা, একতা ও আঞ্চলিক অখণ্ডতা বজায় রাখা এবং রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কড়া সমালোচনার প্রস্তাবনায় ভোটাভুটি হয়।
সাধারণ পরিষদের ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে ১৮১টি দেশ ওই ভোটে অংশ নেয়। এর মধ্যে, ১৪১টি দেশ মস্কোর নিন্দা প্রস্তাবকে সমর্থন করে। রাশিয়া এবং তার মিত্রদল—বেলারুশ, সিরিয়া, উত্তর কোরিয়া, ইরিত্রিয়াসহ পাঁচটি দেশ ছিল প্রস্তাবের বিপক্ষে। এ ছাড়া বাংলাদেশসহ ৩৫ দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। তবে, তা নিন্দা প্রস্তাবের জন্য প্রয়োজনীয় দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাকে প্রভাবিত করেনি।
চীন, ইরান, নিকারাগুয়া, কিউবা, পাকিস্তানসহ ঐতিহ্যগতভাবে মস্কোর সঙ্গে জোটবদ্ধ কিছু দেশ ভোটদানে বিরত ছিল। তবে, রাশিয়ার পক্ষেও কিছু সমর্থক ছিল।
ভোটের ফলাফলের পর জাতিসংঘে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত সেরগেই কিসলিতসা সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ ভোট রুশ ফেডারেশনের জন্য নিঃসন্দেহে একটি শক্তিশালী বার্তা।’
জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস সাংবাদিকদের বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের এ বার্তা বলিষ্ঠ ও স্পষ্ট—ইউক্রেনে শত্রুতা শেষ করুন এবং তা এখনই। বন্দুক নামিয়ে রাখুন—এখনই। সংলাপ ও কূটনীতির দরজা খুলুন—এখনই।’
ভোটের পর ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত ওলাফ স্কুগ বলেন, ‘রুশ সরকার ক্রমেই একা হয়ে পড়ছে। গোটা বিশ্ব বলেছে, তাকে অবিলম্বে আগ্রাসন বন্ধ করতে হবে, তার সৈন্য প্রত্যাহার করতে হবে এবং জাতিসংঘ সনদের নিয়ম মেনে চলতে হবে। রাশিয়া আগ্রাসন বেছে নিয়েছে। আর, বিশ্ব বেছে নিয়েছে শান্তি।’
এছাড়াও গত শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেও ১৫টি সদস্য দেশের মধ্যে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসনের বিরোধিতা করে প্রস্তাব আনা হয়েছিল। সেই প্রস্তাবনায় ১১টি দেশ পক্ষে ভোট দিলেও, ভারতসহ ৩টি দেশ ভোটদানে বিরত থাকে। তবে রাশিয়া ভেটো শক্তি প্রয়োগ করায়, সেই প্রস্তাবনা খারিজ হয়ে যায়।
এরপর রোববার নিরাপত্তা পরিষদ ফের একবার বৈঠকে বসে। এবারে ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে আলোচনার জন্য জরুরি ভিত্তিতে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। তবে ১১টি সদস্য দেশের ভোট দেওয়ায় বুধবার অধিবেশন বসে।
প্রস্তাবনায় গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার ইউক্রেনে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর ঘোষণার নিন্দা করা হয় এবং মস্কো যাতে দ্রুত সম্পূর্ণরূপে ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার করে, তার অনুরোধ করা হয়।