হিজাব পরা ইসলামে অপরিহার্য নয়: কর্ণাটক হাইকোর্ট
বেশ কয়েকমাস ধরেই ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য কর্ণাটকের হিজাব বিতর্কে উত্তাল হয়ে উঠেছিল। হিজাব বিতর্কের জল গড়িয়েছিল আদালত পর্যন্ত। এ বিতর্কের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হিজাব পরিধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
এমন নিষেধাজ্ঞাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে করা সব পিটিশন আজ মঙ্গলবার খারিজ করে দিয়েছেন কর্ণাটক হাইকোর্ট।
আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, হিজাব পরা ইসলামে অপরিহার্য কোনো অনুশীলন নয়। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
হিজাবের পক্ষে অনেকদিন ধরেই আন্দোলন করে আসছেন কর্ণাটকের মুসলিম শিক্ষার্থীরা। কিন্তু আদালতের এই রায়ের কারণে হিজাব পরা নিষিদ্ধ করার বিপক্ষে উচ্চ আদালতে দায়ের হওয়া সব পিটিশন খারিজ হয়ে গেল।
এদিকে বিশৃঙ্খলার আশঙ্কায় কর্ণাটক সরকার এক সপ্তাহের জন্য বেঙ্গালুরু শহরে বড় জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। ব্যাঙ্গালুরুতেও ১৫ থেকে ১৯ মার্চ পর্যন্ত সব ধরনের বড় জমায়েত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। হিজাব বিতর্কের সূত্রপাত হওয়া উদুপিতে মঙ্গলবার সব স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়।
গত ১ জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপিতে একটি কলেজে কয়েকজন হিজাব পরা শিক্ষার্থীকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভাট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরা শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না।
রাজ্যজুড়ে সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েক জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হয়। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। শান্তির আহ্বান জানান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। সব স্কুল, কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।
গত ২৬ জানুয়ারি কর্ণাটক সরকার এ বিষয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে। ঘোষণা করা হয়, কমিটি নির্দিষ্ট সুপারিশ করার আগ পর্যন্ত ছাত্রীরা কেবলমাত্র ইউনিফর্ম পরেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসতে পারবেন। হিজাব বা গেরুয়া উত্তরীয় কিছুই পরার অনুমতি নেই। সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উদুপির কয়েকজন ছাত্রী কর্ণাটক হাইকোর্টে রিট মামলা দায়ের করেন। তারা আদালতকে জানান, হিজাব পরা তাদের মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে। কোনভাবেই তা বাতিল করা যায় না।