টিপু-প্রীতি হত্যা: ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন সেই শ্যুটার মাসুম
রাজধানীর মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যার মূল শ্যুটারের নাম মো. মাসুম ওরফে আকাশ। হত্যাকাণ্ডের ৪৮ ঘণ্টা পর তাকে গ্রেফতার করেছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বগুড়া থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মাসুম সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালাতে চেয়েছিলেন।
রোববার (২৭ মার্চ) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন গোয়েন্দা প্রধান অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার।
তিনি বলেন, টিপু ও প্রীতি হত্যায় গ্রেফতার মাসুম আরও একাধিক মামলার আসামি। এই হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে আরও যারা জড়িত তাদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
তিনি বলেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। ঢাকা শহরে অনেক দিন পর এমন শুটিং মিশনে হত্যা করা হয়। থানা পুলিশের পাশাপাশি ডিবি এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনে কাজ করছে।
গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার আগেরদিন তিনি (মাসুম) মোটরসাইকেল ও একটি পিস্তল নেয়। এজিবি কলোনীতে টার্গেট করে হত্যা করতে। কিন্তু সেদিন না পেরে পরদিন গুলি করে হত্যা করে।
এ ব্যাপারে ইতোমধ্যে ঘটনা সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজনকে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। পাওয়া গেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-উপাত্ত। পাশাপাশি টিপুকে ফোনে হত্যার হুমকি বা সতর্ককারীর সূত্র ধরে এগিয়ে চলছে তদন্ত।
এ ছাড়া ঘটনাস্থল ও আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। মিলেছে কিলারদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলের নম্বর। খুব শিগগির চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের জট খুলবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
এই হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ, র্যাব ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে সাত থেকে আটজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
একই ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে রিকশা আরোহী সামিয়া আফনান প্রীতি (২২) নামে এক কলেজ ছাত্রী নিহত এবং গুলিতে আহত হন টিপুর গাড়িচালক মনির হোসেন মুন্না (৩২)। তাকে উদ্ধার করে রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত আনুমানিক ১০টার দিকে শাহজাহানপুর থানার আমতলা ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালের সামনে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ তিনজনকে স্থানীয় লোকজন রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালে নেয়া হলে রাত পৌনে ১১ টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজ ছাত্রী সামিয়া আফনান প্রীতিকে মৃত ঘোষণা করেন।
স্থানীয় এলাকাবাসি, পুলিশ ও নিহতের পরিবারের সদস্যরা জানান, নিহত জাহিদুল ইসলাম মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা পর্ষদের সদস্যও ছিলেন। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ডলি তার স্ত্রী। এছাড়া নিহত রিকশা আরোহী সামিয়া আফনান প্রীতি বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী বলে জানা গেছে।