আম কেন খাব, কতটুকু খাবো
আমকে বলা হয় ফলের রাজা। রসালো মিষ্টি এই ফলটি খেতে পছন্দ করেন না এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল। আম দেখতে যেমন সুন্দর, এর গুণগুলিও সুন্দর। এটি রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করে। কেবল স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় নয়, পাকা ও কাঁচা উভয় আমেই রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ। আমের মধ্যে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, পটাশিয়াম, ভিটামিন-সি। আর তাই আম কাঁচা বা পাকা যা–ই হোক না কেন, পরিমিত গ্রহণ করলে শরীরের ওপর তেমন কোনো নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করে না।
তাই চলুন দেখে নেই আমের নানা উপকারীতা ও সেইসঙ্গে কে কতটুকু খাবেন সেই বিষয়ক কিছু আলোচনা।
আম কেন খাব
আম ভিটামিন এ ও বিটা ক্যারোটিন, আলফা ক্যারোটিন নামের ফ্ল্যাভিনয়েডসের ভালো উৎস। এগুলো অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করার পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলটি ভিটামিন এ, সি এবং ই-এর ভালো উৎস, যা ত্বক ও চুল ভালো রাখতে সাহায্য করে।
আসুন তবে জেনে নেয়া যাক আমের খুব সাধারণ কিছু পুষ্টি উপকারিতা সম্পর্কে-
১. ত্বক উজ্জ্বল, মসৃন ও সুন্দর রাখে
২. আমের ভিটামিন-সি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে
৩. চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে
৪.পরিপাক ও হজম শক্তি বৃদ্ধি করে, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
৫. স্নায়ুতন্ত্রের সুস্থতায় ভূমিকা রাখে
৬. ভালো ঘুম হয়
৭. দাঁত, চুল ও নখের জন্য বিশেষ উপকারী
৮. রোদে ত্বক নষ্ট হওয়া প্রতিরোধ করে ও রোদে পোড়া ভাব কমায়
৯. গরমের দিনে হিট স্ট্রোক হওয়া প্রতিরোধ করে
১০. আম দেহে ক্যালোরি প্রদানের মাধ্যমে দেহকে কর্মক্ষম ও সতেজ রাখতে সাহায্য করে
আম কতটুকু খাবেন
আম-কাঁঠালের এই মধুমাসে ছোট বড় সবাই আমরা প্রায় প্রতিদিনই আম খেয়ে থাকি। তবে আম বলে কথা নয় প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রেই যেকোনো খাবারই একটি নির্দিষ্ট বা পরিমিত পরিমাণেই খাওয়া উচিৎ। বিশেষ করে ডায়বেটিস রোগীদেরকে আম খাওয়ার ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। যদিও আম হল লো গ্লাইসেমিক ইনডেক্স ফুড তবুও আমে প্রচুর শর্করা ও চিনি রয়েছে। এছাড়াও আমের প্রায় ৮০-৯০ শতাংশই হল ক্যালরি। এসমস্ত কারণে ডায়বেটিস রোগীর ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট পরিমাণে আম খেতে হবে। প্রতিদিন ১ টি ছোট বা মাঝারি আমের (৩০-৪০গ্রাম) অর্ধেকটা (১/২ কাপ অথবা ২-৩ স্লাইস) খাওয়া যেতে পারে, এর বেশি নয়।
আবার ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সময় মেনে খাবার খাওয়াটাও খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। দিনের শুরুর দিকে অর্থাৎ দিনের বেলা আম খেলে, আমের ক্যালরিটুকু সারাদিনের কাজকর্মের মাধ্যমে নিঃশেষ হয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার পর বা রাতে না খেয়ে আম দিনের বেলাতে খাওয়াটাই নিরাপদ।