এবার নিউমার্কেটে অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা
রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের সংঘর্ষের সময় অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেছ ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি)। নিউ মার্কেট থানায় করা এ মামলায় ১৫০ থেকে ২০০ জনকে করা হয়েছে অজ্ঞাত আসামি। মামলাটি করেছেন অ্যাম্বুলেন্সটির মালিক মো. সুজন।
নিউ মার্কেট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শ ম কাইয়ুম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে নিউ মার্কেট এলাকার সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে এখন পর্যন্ত পাঁচটি মামলা করা হলো।
গত ১৮ এপ্রিল দিনগত রাত ১২টায় শুরু হয় ব্যবসায়ী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ। আড়াই ঘণ্টা সংঘর্ষের পরদিন মঙ্গলবার দিনভর নিউ মার্কেট এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ চলে। ওই দিন, মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে থেকে দেখা যায়, একটি অ্যাম্বুলেন্স ঢাকা কলেজের দিক থেকে নিউমার্কেটের দিকে আসছিল। নিউমার্কেটের ওভারব্রিজের কাছাকাছি এলে অ্যাম্বুলেন্সটি থামান সেখানে উপস্থিত দোকানি ও ব্যবসায়ীরা। সঙ্গে সঙ্গেই অনেকে মিলে লোহার রড দিয়ে প্রথমে সামনে, পরে চারপাশের কাচে আঘাত করতে থাকেন।
সে সময় অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে রোগী ছিল। চালক বারবার অনুরোধ করছিলেন। কিন্তু, কেউ কথা শুনছিলেন না। তবে, দুই যুবক পরে থামানোর চেষ্টা করেন। যদিও ততক্ষণে গাড়িটির চারপাশ ভেঙে একাকার।
ওই দিন দুপুরে রাজধানীর সাইন্সল্যাব মোড়ে অ্যাম্বুলেন্সের চালক জাহাঙ্গীর আলম এক অভিযোগে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি রোগী নিয়ে যাওয়ার সময় প্রথমে ছাত্ররা আটকায়। গাড়িতে রোগী দেখে তাঁরা যেতে দেয়। কিন্তু, মার্কেটের সামনে গেলেই অতর্কিত আমার গাড়িতে হামলা করে দোকানদাররা। আমাকেও আহত করে।’
গত ১৮ এপ্রিল রাত ১২টার দিকে রাজধানীর নিউ মার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে চলা এ সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ী আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ টিয়ার শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে। এসময় আহত হন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যও।
মঙ্গলবার সকালে আবারও সংঘর্ষে জড়ান শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীরা। মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে তারা ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকেন। ছাত্রদের অনেকে হেলমেট পরে এবং লাঠি হাতে নিয়ে সংঘর্ষে জড়ান। ব্যবসায়ী-কর্মচারীরাও লাঠিসোটা ও লোহার রড নিয়ে ছাত্রদের ওপর হামলা চালানো শুরু করেন।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ সংঘর্ষ ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে গোটা নিউ মার্কেট ও সায়েন্সল্যাব এলাকায়। থেমে থেমে সারাদিন চলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী এবং প্রায় অর্ধশত ব্যবসায়ী-কর্মচারী আহত হন।
সংঘর্ষের রেশ চলে বুধবার দিনভর। দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন ব্যবসায়ীরা। বিকেলে ব্যবসায়ীদের বক্তব্য প্রত্যাখান করে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামেন। এরপর রাতে তারা সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ ভূমিকায় সংশ্লিষ্ট ডিসি, এডিসি ও নিউ মার্কেট থানার ওসির প্রত্যাহারসহ ১০ দফা দাবি জানান।