নওগাঁয় আম পাড়া শুরু ২৫ মে
নওগাঁয় জাতভেদে আম পাড়ার তারিখ নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন। নিরাপদ, বিষমুক্ত ও পরিপক্ব আম বাজারজাত নিশ্চিত করতে স্থানীয় আমচাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ২৫ মের আগে কোনো জাতের আম নামানো যাবে না।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর থেকে জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের সই করা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিষয়টি জানানো হয়।
ভোক্তা অধিকারের স্বার্থে ও নওগাঁর আমের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখতে প্রতি বছর এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থকে। তবে আবহাওয়া, তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাতসহ কোনো কারণে এই তারিখ পরিবর্তন করতে হলে তা সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের পূর্বানুমতি নিতে হবে। আর এই আদেশ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে আমবাগানগুলোতে কঠোর নজদারি রাখতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক খালেদ মেহেদী হাসান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, নওগাঁয় সাধারণত গুটি জাতের কিছু আম সবার আগে পাকে। জেলা প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এবার আগামী ২৫ মে থেকে এই আমটি গাছ থেকে নামাতে পারবেন চাষিরা। আর উন্নত জাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ৩০ মে, ক্ষীরশাপাত বা হিমসাগর ৫ জুন থেকে নামানো যাবে। এছাড়া নাগ ফজলি ৮ জুন, ল্যাংড়া ১২ জুন, ফজলি ২২ জুন এবং আম্রপালি ২৫ জুন থেকে নামানো যাবে। আর সবার শেষে ১০ জুলাই থেকে নামানো যাবে আশ্বিনা ও বারি-৪ জাতের আম।
জেলা প্রশাসক খালেদ মেহেদী হাসান বলেন, অসময়ে আম পাড়া বন্ধে এবং ক্যালসিয়াম, কার্বাইড, পিজিআর, ফরমালিন, ইথিফনের মতো কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে যেন আম পাকানো না হয়, তার জন্য গাছ থেকে আম নামানোর ক্ষেত্রে সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি ভ্রাম্যমাণ আদালত এবং পুলিশ কঠোরভাবে মনিটরিং করবে।
তবে আবহাওয়ার তারতম্যের কারণে কোথাও নির্ধারিত সময়ের আগে গাছে আম পাকলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে জানিয়ে চাষিরা আম পাড়তে পারবেন। কৃষি ও খাদ্য পণ্যবাহী পরিবহন লকডাউনের আওতার বাইরে আছে, তাই আমচাষিদের আম রপ্তানিতে কোনো বেগ পেতে হবে না।
প্রসঙ্গত, এবার জেলায় আমের আবাদ হয়েছে ২৯ হাজার ৪৭৫ হেক্টর জমিতে। এই মৌসুমে আমের সম্ভাব্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ লক্ষ ৫৮ হাজার ৪৩৫ মেট্রিক টন। আর পার হেক্টরে জমিতে ১২.৫০ মেট্রিক টন।
উপজেলাভিত্তিক আম চাষের পরিমাণ: সদর উপজেলায় ৪৪৫ হেক্টর, রানীনগরে ১১০ হেক্টর, আত্রাইয়ে ১২০ হেক্টর, বদলগাছীতে ৫২৫ হেক্টর, মহাদেবপুরে ৬৮০ হেক্টর, পত্নীতলায় ৪হাজার ৮৬৫ হেক্টর, ধামইরহাটে ৬৭৫ হেক্টর, মান্দায় ৪০০ হেক্টর, পোরশায় ১০ হাজার ৫২০ হেক্টর, সাপাহারে ১০ হাজার হেক্টর, নিয়ামতপুরে ১ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে আম আবাদ করা হয়েছে।