যুক্তরাজ্যে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে শিশু কিডনি রোগীর সংখ্যা
যুক্তরাজ্যে দিন দিন শিশুদের মধ্যে অস্বাভাবিক কিডনি বিকল বা লিভার প্রদাহ কিংবা হেপাটাইটিসের আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এরই মধ্যে কিডনি বিকল রোগে আরও ৩৪ শিশু আক্রান্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এতে করে দেশটিতে কিডনি বিকল হওয়া রোগী ১৯৭-তে পৌঁছেছে। এদের মধ্যে মোট ১১ জন মিশুর লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করা প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রায় ৮৫ শতাংশ মানুষ কিডনির রোগ সম্পর্কে অবগত থাকেন না। রোগে আক্রান্ত হয়ে কিডনি বিকল হওয়ার পর তারা রোগের ভয়াবহতা সম্পর্কে জানতে পারেন।
বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন যে এটি ঠিক কী কারণে ঘটছে। তবে গবেষণা রিপোর্টে বলা হচ্ছে, অ্যাডেনোভাইরাস নামক একটি সাধারণ ভাইরাস এর কারণ হতে পারে। শুধু ব্রিটেনই নয় ইউরোপের আরও কয়েকটি দেশে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। আর এতে অন্তত একজনের মৃত্যু হয়েছে।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সি জানিয়েছে, শিশুদের হেপাটাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা এখনও অত্যন্ত কম। আক্রান্ত হওয়া বেশিরভাগ শিশু অ্যাডেনোভাইরাসে আক্রান্ত। এই ভাইরাসে সংক্রমিত হলে হালকা অসুস্থতা, ডায়রিয়া এবং সর্দিতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রিটেনে করোনার প্রথম লকডাউনের সময়ে যখন শিশুরা ঘরবন্দি হয়ে ছিল তখন অ্যাডেনোভাইরাসের সংক্রমণ দেখা যায়। লকডাউন পরবর্তী সময়ে এই সংক্রমণশীলতা বেড়েছে। সাধারণত পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুরা এই হেপাটাইটিসে আক্রান্ত হচ্ছে।
এই রোগের সাধারণ লক্ষ্মণগুলোর মধ্যে রয়েছে- ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব, জন্ডিস, ত্বক এবং চোখ হলুদ হয়ে যাওয়া প্রভৃতি। এছাড়া শিশুদের হেপাটাইটিসের অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে- গাঢ় প্রস্রাব, ফ্যাকাশে বা ধূসর রঙের পু, চামড়া, পেশী এবং জয়েন্টে ব্যথা, শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা, সব সময় অস্বাভাবিকভাবে ক্লান্ত বোধ করা, ক্ষুধামন্দা, পেট ব্যথা ইত্যাদি।
ইউকে হেলথ সিকিউরিটি এজেন্সির সিনিয়র চিকিৎসা উপদেষ্টা ডাঃ রেনু বিন্দ্রা বলেন, “আমরা সবাইকে হেপাটাইটিসের লক্ষণ সম্পর্কে সতর্ক থাকার আহ্বান করছি। বিশেষ করে জন্ডিস, চোখের সাদা অংশে হলুদ দাগ দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন৷ বমি এবং ডায়রিয়ার মতো উপসর্গযুক্ত শিশুদের ৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত বাড়িতে থাকতে হবে। এছাড়া শিশুদেরকে সবসময় পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও তাদের হাত ভালভাবে ধুলে অনেক সাধারণ সংক্রমণের বিস্তার কমতে পারে।