ব্রিটেনে ফের করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে
বিশ্বব্যাপী আবারো বেড়ে চলছে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। ব্রিটেন, যুক্তরাষ্ট্র, পর্তুগাল এবং ইসরাইলে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে উদ্বেগজনক হারে। নতুন করে সংক্রমণের জন্য ওমিক্রনের বি.এ-ফোর এবং বি.এ-ফাইভ ভ্যারিয়েন্টকে দায়ী করা হচ্ছে। ওমিক্রনের এই দুই উপজাতই মানব শরীরের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে ফাঁকি দিতে পারে।
বৃটেনের এনএইচএস এর ডাটা থেকে দেখা যাচ্ছে, ওমিক্রন সাব ভ্যারিয়েন্ট এমনভাবে রূপান্তরিত হয়েছে যে, তা ফুসফুসকে টার্গেট করতে পারে। এর ফলে নতুন করে কোভিড ঢেউ শুরু হতে পারে বলে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওমিক্রনের দুটি সাব ভ্যারিয়েন্টের ওপর এপ্রিল থেকে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। তারা জানার চেষ্টা করছে এই দুটি সাব ভ্যারিয়েন্ট তাদের পূর্বসুরিদের তুলনায় অধিক সংক্রামক কিনা। একই সঙ্গে এ মাসে বৃটেনে দৈনিক লক্ষণযুক্ত আক্রান্তের শতকরা হার ৭৫ ভাগ বেড়ে গেছে। মানে প্রতিদিন আক্রান্ত হু হু করে বাড়ছে। এপ্রিলের পর প্রথমবার দিনে যুক্তরাজ্যে কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট ও আইনিউজ।
কিংস কলেজ লন্ডনের প্রফেসর টিম স্পেক্টর পরিচালিত ‘জো কোভিড’ স্টাডি অ্যাপ থেকে সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ মাসে গড়ে প্রতিদিন কোভিডে দুই লাখ ১২১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারির পর এটাই যুক্তরাজ্যে সর্বোচ্চ। তবে মধ্য মার্চ ও মধ্য এপ্রিলের সময়ে দিনে সংক্রমণের সংখ্যা পিক বা সর্বোচ্চ প্রায় সাড়ে তিন লাখে পৌঁছে যায়। কমপক্ষে দু’মাস ধরে বৃটেনে আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ পেরিয়ে গেছে।
এদিকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর রিপোর্টে বলা হয়, গত সপ্তাহে নতুন হিসাবে দেখা যায়, বৃটেনে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের শতকরা হার বৃদ্ধি পেয়েছে শতকরা ৪৩ ভাগ। এ ঘটনা ঘটে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের প্লাটিনাম জুবিলি উদযাপনের পর। আকস্মিক সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার পিছনে দুটি নতুন সাব—ভ্যারিয়েন্ট রয়েছে বলে মনে করা হয়। উপরন্তু ১১ জুনে যে সপ্তাহ শেষ হয়েছে সেই সপ্তাহে বৃটেনে প্রায় ১৪ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আগের সপ্তাহে এই সংখ্যা ছিল ৯ লাখ ৯০ হাজার।
ইউনিভার্সিটি অব টোকিও’র কিই সাতো ও তার সহকর্মীদের প্রাথমিক ডাটা অনুযায়ী, সাব ভ্যারিয়েন্ট এমনভাবে রূপান্তরিত হয়েছে যে, তা শ্বাসনালীর টিস্যুর পরিবতে ফুসফুসের কোষকে আক্রান্ত করতে পারে। এর ফলে এই ভ্যারিয়েন্ট এর আগে শনাক্ত হওয়া আলফা অথবা ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো আচরণ করতে পারে।
কিই সাতো বলেছেন, তাদের পুরো গবেষণা বলছে অরিজিনাল সাবভ্যারিয়েন্টের চেয়ে অধিক শক্তিশালী স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টির সক্ষমতা আছে এই সাবভ্যারিয়েন্টগুলোর।