পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েও অনাস্থার মুখে জনসন
পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েও অনাস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। ব্রিটিশ আইনসভায় বিরোধী দল লেবার পার্টির পক্ষ থেকে গতকাল মঙ্গলবার জনসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জমা দেওয়ার কথা। আজ বুধবার প্রস্তাবের পক্ষে-বিপক্ষে সব দলের আইন প্রণেতারা (এমপি) ভোটে অংশ নিতে পারেন।
বিতর্কের মুখে দাঁড়িয়ে কয়েক দিন আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যাওয়ার ঘোষণা দেন কনজারভেটিভ পার্টির (রক্ষণশীল) নেতা বরিস জনসন।
সেই সঙ্গে দলের আগামী নেতৃত্ব নির্বাচিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের ঘোষণা দেন।
রক্ষণশীল এমপিরা (টরি এমপি) দলের পরবর্তী নেতা নির্বাচনের তৎপরতা এরই মধ্যে শুরু করেছেন। সব প্রক্রিয়া শেষ করে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর রক্ষণশীলরা নতুন নেতা পাবেন, যিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়া এবং তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে জনসনের দায়িত্ব পালনের ঘোষণার বিরোধিতা করছে লেবার পার্টি এবং কনজারভেটিভ পার্টির একাংশ। তারা ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে জনসনকে আর দেখতে চান না। এ অবস্থায় লেবারদের পক্ষ থেকে অনাস্থা প্রস্তাব আনার উদ্দেশ্য হচ্ছে, ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে তাঁর অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া।
জনসনের বিরুদ্ধে অনাস্থা সফল হলে যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন ঘোষণার সম্ভাবনাও দেখা দিতে পারে। তবে টরি এমপিদের সংখ্যা আইনসভায় অনেক বেশি হওয়ায় লেবারদের অনাস্থা প্রস্তাব সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। তাঁরা আরো ধারণা করছেন, জনসনবিরোধী টরি এমপিরা এই মুহূর্তে জনগণকে আবারও ভোটের মাঠে নিয়ে যেতে না-ও চাইতে পারেন। এ ছাড়া দলটির নেতৃত্ব নির্বাচনপ্রক্রিয়া এরই মধ্যে শুরু হয়েছে।
নেতা নির্বাচনের জন্য টরি এমপিদের শক্তিশালী সংস্থা ‘১৯২২ কমিটি’ গত সোমবার নির্বাচনপ্রক্রিয়ার জন্য সময়সীমাসহ রূপরেখা তৈরি করেছে। মঙ্গলবার মনোনয়নপ্রক্রিয়া শুরু ও শেষ হওয়ার কথা ছিল।
ওই কমিটির চেয়ারম্যান গ্রাহাম ব্রাডি জানান, গ্রীষ্মকালীন বিরতি শেষে আইনসভার কাজ আবার শুরু হলে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর নতুন প্রধানমন্ত্রীর নাম জানা যাবে।
নিয়ম অনুযায়ী রক্ষণশীলরা কয়েক দফায় ভোটাভুটির মাধ্যমে তাঁদের নেতা নির্বাচন করে থাকেন। এই প্রক্রিয়ায় ভোটাভুটির মাধ্যমে প্রার্থীসংখ্যা দুইয়ে নামিয়ে আনা হয়। পরে এই দুজনের একজনই প্রধানমন্ত্রী তথা আইনসভায় দলের নেতা হিসেবে নির্বাচিত হন।
ওই কমিটির জয়েন্ট-এক্সিকিউটিভ সেক্রেটারি বব ব্ল্যাকম্যান জানান, আগামী ২১ জুলাই আইনসভার গ্রীষ্মকালীন বিরতি শুরুর আগে শেষ লড়াইয়ের জন্য অবতীর্ণ দুজনকে নির্বাচিত করার কাজ শেষ করতে চান তাঁরা। এ ছাড়া গ্রাহাম ব্রাডি আরো জানান, প্রথম দফার ভোটাভুটি বুধবার এবং দ্বিতীয় দফা বৃহস্পতিবার হতে পারে।