খালাস পেয়েও কনডেম সেলে ৭ বছর, নজরে এলো হাইকোর্টের
চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় জানে আলম হত্যা মামলায় হাইকোর্ট থেকে খালাসের পরও সাত বছর ধরে কনডেম সেলে থাকা আবুল কাশেমকে নিয়ে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদন আদালতের নজরে এনেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী। বিষয়টি নিয়ে লিখিত আবেদন করতে পরামর্শ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন সেলিম ও বিচারপতি ড. মো.বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চে বৃহস্পতিবার বিষয়টি উপস্থাপন করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির।
এরপর আদালত বলে, ‘আপনি লিখিত আবেদন করুন। আজই করুন।’
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, লোহাগাড়া থানার জানে আলম হত্যা মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান। তার খালাস পাওয়ার আদেশ যথাসময়েই উচ্চ আদালত থেকে পৌঁছায় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে। কিন্তু আদেশ কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছায়নি ৭ বছর ৩ মাস ১১ দিনও।
২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল এক মামলায় অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে হাজিরা দিতে আসলে আবুল কাশেমকে শোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই দিন থেকে কারাগারের কনডেম সেলে আছেন আবুল কাশেম।
আবুল কাশেম লোহাগাড়া থানার আমিরাবাদ ইউনিয়নের রাজঘাটা আমিরখান চৌধুরী পাড়ার বেলায়েত আলীর ছেলে।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০০২ সালের ৩০ মার্চ রাজঘাটা আমিরখান চৌধুরী পাড়ায় জানে আলেম হত্যা মামলার আসামি ছিলেন আবুল কাশেম। ১৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত ২০০৭ সালের ২৪ জুলাই আবুল কাশেমসহ ১২ জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড ও ৮ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। আবুল কাশেম রায়ের সময় পলাতক ছিলেন। ২০১৩ সালের ১১ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি এ.কে.এম. আসাদুজ্জামান ও শহীদুল করিমের বেঞ্চ ডেথ রেফারেন্স শুনানিতে আবুল কাশেমকে খালাস দেন।
২০১৩ সালের ১১ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট বিভাগের রায়ে পলাতক আবুল কাশেমের করণির ভুলের কারণে কার্যকর অংশে অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় একই বেঞ্চ ২০১৬ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সম্পূরক আদেশে আবুল কাশেমকে খালাস দেয়ার বিষয়ে সুস্পষ্ট আদেশ দেন।
অন্য একটি মামলায় ২০১৫ সালের ১৪ এপ্রিল অতিরিক্ত চট্টগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালত হাজিরা দিতে আসলে আবুল কাশেমকে শোন এ্যারেস্ট দেখিয়ে কারাগারে পাঠায়। সেই থেকে আবুল কাশেম চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে আছেন।
আবুল কাশেমের ছেলে ইফতেখার হোসেন নোহাশ বলেন, ‘আমার বাবা দীর্ঘদিন বিনা বিচারে কারাগারে আছেন। তার বিরুদ্ধে একটি মামলা ছিল, সেটাতে জামিনে ছিলেন। আমার বাবার মুক্তি চাই।’