রাজধানীর ‘ফুসফুস’ রমনা পার্ক
রাজধানীর ঢাকার ফুসফুস হিসেবে পরিচিত রমনা পার্ক। ইট-পাথরে শহরে স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে রমনা পার্কে ছুটে আসেন নগরবাসী। সতেজ বাতাস ও মনোরম পরিবেশের স্বাদ নিতে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এখানে আসেন দর্শনার্থীরা। পার্কের চোখ জুড়ানো সবুজ প্রাঙ্গণ মুগ্ধ করে সবাইকে।
মুঘল আমল। বাংলায় সুবাদার ইসলাম খাঁর শাসনামল। ১৬১০ সাল। অর্থাৎ আজ থেকে চার শতকেরও বেশি সময় আগে, তখন থেকেই ঢাকার রমনা বিশেষ এলাকা। মুঘলদের ‘বাগ-ই-বাদশাহী’ থেকে রঙ-রূপ-আকার-আয়তন বদলাতে বদলাতে আজকের রমনা পার্ক। বাংলাদেশের একমাত্র পরিকল্পিত উদ্যান।
কারো কাছে এই পার্ক ইট-পাথরের ঢাকায় প্রকৃতির মাঝে হাঁটার ‘আনন্দ’। আবার কারো কাছে সবুজ-শ্যামলিমায় মেশার প্রাণের প্রাঙ্গণ। সকাল-বিকালে নানা বয়েসী মানুষজন এখানে আসেন হাঁটাহাটি করতে; আবার কেউ আসেন প্রকৃতির সান্নিধ্য পেতে।
রাজধানীতে সবুজের ছোঁয়া পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। যান্ত্রিক এ নগরীতে তেমন বড় পার্ক বা উদ্যান নেই বল্লেই চলে। এর মধ্যে ঢাকার ‘ফুসফুস’খ্যাত রমনা পার্ক ৬৮ দশমিক ৫ একর জায়গাজুড়ে সবুজের সমারোহ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। পার্কটিতে নানা জাতের গাছ, পাখির কিচিরমিচির, ফুলের গাছ আর কৃত্রিম লেক মিলে যেন একাকার হয়ে আছে।
প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসে পার্কটিতে। যানজটের এ নগরীতে একটু প্রশান্তির ছোঁয়া পেতে অনেকেই এখানে কিছুটা সময় পার করে। প্রাতঃভ্রমণ ও বৈকালিক ভ্রমণে সবচেয়ে বেশী মানুষ আসে এখানে। রমনা পার্কের আশপাশে বসবাস করা অনেকেই সকালে ব্যয়ামের জন্য রমনা পার্ককে বেছে নিয়েছে। অনেকে শিশুদের নিয়েও এখানে আসে খেলা করতে।
সরেজমিনে রমনা পার্কে গিয়ে দেখা যায়, শত শত লোক ওয়াকিং এর জন্য রমনা পার্কের সব কয়টা গেইট দিয়ে ঢুকছে। তারা ভেতরে সবুজের চাদরে ঘেরা রমনার মধ্যে হাটাহাটি করছে। কেউ কেউ দৌড়িয়ে ব্যায়াম করছে। আবার আশপাশের স্কুলগুলোতে পড়াশোনা করে কিছু শিক্ষার্থীর অভিবাবকদেরও দেখা গেছে আড্ডায়।
রমনা পার্ক ঢাকার ঐতিহ্যের অংশ হয়ে আছে। রমনা জাতীয় উদ্যান, লন্ডনের ‘কিউই গার্ডেনের’ আদলে তৈরি বাংলাদেশের একমাত্র পরিকল্পিত উদ্যান। এটি বাস্তবায়নে সময় লেগেছিল ২০ বছর। ব্রিটেনের গার্ডেন বিশেষজ্ঞ আরএল প্রাউড লক রমনার এই নিসর্গ পরিকল্পনা করেছিলেন।