প্রোটিয়া ব্যাটারদের পর বোলারদের তাণ্ডবে পিষ্ট বাংলাদেশ
ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের দশম ম্যাচে রাইলি রুশোর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আর ডি ককের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সামনে ২০৬ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্য দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে খেলতে নেমে প্রোটিয়া বোলারদের তাণ্ডবে ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। হারে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার টুয়েলভের দশম ম্যাচে রাইলি রুশোর দুর্দান্ত সেঞ্চুরি আর ডি ককের ঝড়ো হাফসেঞ্চুরিতে বাংলাদেশের সামনে ২০৬ রানের পাহাড় সমান লক্ষ্য দাঁড় করায় দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে খেলতে নেমে প্রোটিয়া বোলারদের তাণ্ডবে ১০১ রানেই গুটিয়ে যায় টাইগাররা। হারে ১০৪ রানের বিশাল ব্যবধানে।
২০৬ রানরে পাহাড় সমান লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুটা ভালো করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে স্কোরবোর্ডে দুই ওপেনার নাজমুল হোসেন শান্ত ও সৌম্য সরকার মিলে যোগ করেন ১৭ রান। কাগিসো রাবাদকে দুটি ছক্কা হাঁকান সৌম্য।
দ্বিতীয় ওভারে আসে ৯ রান, ২ ওভারে ২৬ রান নিয়ে আশাও জাগিয়েছিলেন দুজন। কিন্তু তৃতীয় ওভারে এসে উইকেট জোড়া উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে টাইগাররা। এনরিক নরিকাকে অ্যাক্রোস দ্য লাইন খেলতে গিয়ে উইকেটকিপার কুইন্টন ডি ককের গ্লাভসে ক্যাচ দেন সৌম্য। বাঁহাতি এই ওপেনার আউট হয়েছেন ৬ বলে ১৫ রান করে।
ওই ওভারের চতুর্থ বলে সাজঘরে ফিরেন নাজমুল হোসেন শান্তও। নরকিয়ার ১৪৮ কি.মি. গতির বলে বোল্ড হয়েছেন বাঁহাতি এই ব্যাটার। শান্তর ব্যাট থেকে এসেছে ৯ রান। নিজের পর ওভারে সাকিব আল হাসানকেও ফেরান নরকিয়া। ডানহাতি এই পেসারের বলে লেগ বিফোর হয়ে বাংলাদেশের অধিনায়ক সাজঘরে ফেরেন ১ রানে।
এতে অনেকটা খাদের কিনারায় চলে যায় বাংলাদেশ দল। মাঠে নেমে বেশি সময় থাকতে পারেননি আফিফ হোসেনও। মিডলঅর্ডারের ভরসা আফিফও ফিরেন ১ রানে রাবাদার বলে। ওয়েন পার্নেলেকে ক্যাচ দিয়ে তিনি ফেরার পরও ক্রিজে আটকে ছিলেন লিটন দাস। একপ্রান্তে রান যোগ করেন যাচ্ছিলেন স্কোরবোর্ডে। কিন্তু কোন ব্যাটারই তাকে সঙ্গ দিতে পারছিলেন না।
মেহেদি মিরাজ ১১, মোসাদ্দেক হোসেন ০ ও নুরুল হাসান ২ রানে তাবরাইজ শামসি ও কেশব মহারাজের ফাঁদে পা দিলে ৭৬ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে বসে বাংলাদেশ। এ
ক প্রান্তে লড়াই করতে থাকা লিটন শামসির তৃতীয় শিকার হয়ে ফিরলে তখনই ম্যাচ শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের। ৩১ বলে ৩৪ রান করে তিনি ফিরলে শেষ ব্যাটারদের চেষ্টায় দলীয় ১০০ পার করে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরই নরকিয়া বোল্ড করেন তাসকিনকে। ১০১ রানে গুটিয়ে যায় বাংলাদেশ।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করে নির্ধারিত ওভারে ২০ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৫ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা। রুশো তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় এবং বিশ্বকাপ মঞ্চে প্রথম প্রোটিয়া ব্যাটার হিসেবে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। ৫৬ বলে ৭ চার ও ৮ ছক্কায় সাজান ১০৯ রানের ইনিংস। তার সঙ্গে জুটি বাধা ওপেনার ডি কক খেলেন ৩৮ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৩ রানের ইনিংস।
ঐতিহাসিক সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) টস ভাগ্যে জয়ী হতে পারেননি সাকিব আল হাসান। টস জিতে টাইগারদের ফিল্ডিংয়ে পাঠায় প্রোটিয়া অধিনায়ক। প্রোপিয়াদের শুরুটা ভালো করতে দেয়নি বাংলাদেশ।
ইনিংসের প্রথম বলে তাসকিন আহমেদের ব্যাক অব লেংথ ডেলিভারিতে টেম্বা বাভুমা ২ রান নিলেও এরপর তাকে চেপে ধরেন ডানহাতি এই পেসার। প্রথম ওভারের শেষ বলে তাসকিনের অফ স্টাম্পের বাইরের বল খেলতে গিয়ে উইকেট কিপার নুুরুল হাসান সোহানের গ্লাভসে ক্যাচ প্রোটিয়া কাপ্তান দেন বাভুমা। ফিরে যান ২ রানে।
এরপরই জুটি বাধেন ডি কক ও রাইলি রুশো। এই জুটিতে ঝড় উঠতে থাবে বাংলাদেশের বোলারদের বিপক্ষে। তাসকিন, হাসান, মোস্তাফিজ এবং সাকিবদের ওপর চড়াও হয়ে খেলে ১০ ওভারে স্কোরবোর্ডে ৯৬ রান যোগ করে প্রোটিয়ারা। দলীয় ১০০ পুরণের আগেই ৩০ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন রুশো।
এর খানিক পর ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পান ডি ককও। ১৪ ওভারের আগেও দলীয় ১৫০ রানে পৌঁছে যায় আফ্রিকা, নিজেদের মাঝেও দেড়শ রানের জুটি গড়ে তোলেন তারা। এরপর আফিফ হোসেনকে বোলিংয়ে এনে ব্রেক থ্রু পায় বাংলাদেশ। এই স্পিনারকে বাউন্ডারি লাইনে উড়িয়ে মারতে গিয়ে সৌম্য সরকারের হাতে ধরা পড়েন কক। ৩৮ বলে তিনি ৬৩ রানে ফিরলে ট্রিস্টান স্টাবসকে ৭ রানে আউট করেন সাকিব।
৩ উইকেট হারালেও ব্যক্তিগত ৫২ বলে সেঞ্চুরি তুলে নেন রুশো। তবে মাইলফলকে পৌঁছে আরও চড়াও হতে গিয়ে লিটন দাসের হাতে সাকিবের ওভারে আউট হন তিনি। ৫৬ বলে ১০৯ রান করেন রুশো।
শেষ ৯ বলে আইডেন মার্করাম ও ডেভিড মিলার মিলে দলকে ২০০’র ওপর নিয়ে গেলেও হাসানের উইকেট হয়ে ফেরেন মার্করাম। শেষ ২ বলে পারনেল কোন রান না নিতে পারলেও ২০৫ রানের পুঁজি নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফ্রিকা।