বেগুনে ক্যানসারের কোষ নয়, পাওয়া গেছে ভারী ধাতু
বেগুনে ক্যানসারের কোষ নয়, যেটি পাওয়া গেছে তা হচ্ছে ভারী ধাতু। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে বেগুনে ক্যানসারের উপাদান পাওয়া গেছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে আলাপকালে এমন মন্তব্য করেছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড বায়োটেকনোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শামসুল হক প্রধান।
শাবিপ্রবির এই অধ্যাপক জানান, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক বেগুন নিয়ে গবেষণা করেছেন, যেখানে জামালপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় চাষ করা বেগুন এবং ওই এলাকার মাটিতে ভারী ধাতুর উপস্থিতি দেখেছেন। গবেষকদল জামালপুরের বেগুন ও জমিতে যে ভারী ধাতুর উপস্থিতি পেয়েছেন, তার মধ্যে কিছু আছে সহনশীল আর কিছু সহনশীল মাত্রার চেয়ে বেশি। বর্তমানে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা এই ভারী ধাতুর দ্বারা দূষিত হচ্ছে। এর অন্যতম কারণ ঠিকমতো বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না থাকা। বেশি পরিমাণ ভারী ধাতু থাকা ওই এলাকার বেগুন ও অন্যান্য শাকসবজি, যেকোনো কৃষি ফসল খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে তা খাদ্যশৃঙ্খলের মাধ্যমে মানুষের শরীরের গিয়ে জমা হয়। এর প্রভাবে মানুষের বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে, যেমন: মানসিক ভারসাম্যহীনতা, বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ, প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস, এমনকি ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কাও থেকে যায়।
ক্যানসার কোষের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ায় যেসব বিষয় উঠে এসেছে–‘ক্যানসার কোষ পাওয়া গেছে’–এই বিষয়ে গবেষণাপত্র দেখে বুঝতে পারি গবেষকদল অধিক ভারী ধাতু গ্রহণের ফলে ক্যানসার হওয়ার ঝুঁকি দেখিয়েছেন। আমি এখানে ক্যানসার কোষের উপস্থিতি দেখতে পাইনি। বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনোভাবে ভারী ধাতু গ্রহণ করছে। এর অন্যতম প্রধান কারণ, অধিক ভারী ধাতুর ব্যবহার ও শিল্পকারখানার বর্জ্যগুলো যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়া।
অধ্যাপক শামসুল হক প্রধান বলেন, বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চল এলাকাগুলোর বর্জ্যগুলো পরিশোধিত করে আমাদের পরিবেশে ছাড়তে হবে। এসব কারখানার বর্জ্য পানির সঙ্গে মিশে কৃষিজমি দূষিত করছে। এগুলো যদি সঠিকভাবে ব্যবস্থাপনা করা না হয়, আমাদের পরিবেশ, পানি ও মাটিতে ভারী ধাতুর পরিমাণ বেড়ে যাবে এবং আমাদের এর দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যাবে।