বিএনপির সমাবেশ: সিলেটে ধর্মঘট চান না শ্রমিকরা, দোটানায় মালিকরা
বিএনপির সমাবেশের আগের দিন থেকেই পরিবহন ধর্মঘট কার্যকর হয়েছে দেশের ছয় বিভাগে। সিলেটেও একই ঘটনা ঘটবে কি না, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে অনেকের। এখন পর্যন্ত ধর্মঘট ডাকার কোনো চিন্তা নেই বলে জানিয়েছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিক নেতারা। অন্যদিকে পরিবহন মালিকপক্ষ এ বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।
কেন্দ্রীয় নেতারা নির্দেশনা দিলে সিলেটেও ধর্মঘট হবে বলে জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। আর বিএনপি নেতাদের আশা, সিলেটের সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের কথা বিবেচনা করে ধর্মঘট থেকে বিরত থাকবেন পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। ধর্মঘট হলেও সমাবেশ সফল করতে বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া আছে বলে জানিয়েছেন তারা।
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদসহ বিভিন্ন ইস্যুতে দেশের সব বিভাগে গণসমাবেশ করছে বিএনপি। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা, রংপুর, বরিশাল ও ফরিদুপরে সমাবেশ হয়েছে।
সব বিভাগেই সমাবেশের আগের দিন থেকে শুরু হয় পরিবহন ধর্মঘট। এতে সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি দুর্ভোগ পোহাতে হয় সাধারণ মানুষকেও।
সিলেটেও বিএনপির সমাবেশের আগে ধর্মঘট ডাকা হবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জেলা পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মইনুল ইসলাম রোববার রাতে বলেন, ধর্মঘট ডাকার কোনো চিন্তা বা লক্ষ্য আমাদের নেই। আমরা শ্রমিকরা সর্বদলীয়।
‘সবার সঙ্গেই আমরা আছি। ধর্মঘটের ব্যাপারে আমাদের কেন্দ্রীয় কমিটি থেকেও এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা আসেনি।’
মালিকপক্ষ পরিবহন বন্ধ রাখলে কিছু করার থাকবে না জানিয়ে এ পরিবহনশ্রমিক নেতা বলেন, ‘মালিকপক্ষ যদি সড়কে গাড়ি বের না করে তাহলে শ্রমিকরা চালাতে পারবে না। ফলে মালিকপক্ষ এ ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয়, তা দেখতে হবে।’
ধর্মঘটের বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি জানিয়ে বাস মালিক সমিতি সিলেট জেলা শাখার সভাপতি আবুল কালাম বলেন, ‘সবকিছু বিবেচনা করেই আমাদের চলতে হয়। সরকারের কথাও শুনতে হয়। তা ছাড়া যানবাহন ও যাত্রীদের নিরাপত্তার কথাও আমাদের ভাবতে হয়নি।’
‘সবকিছু বলাও ঠিক নয়’ উল্লেখ করে এ পরিবহন মালিক নেতা বলেন, ‘পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতারা বসে এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
পরিবহন শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকলেও বিএনপির সমাবেশে কোনো প্রভাব পড়বে না জানিয়ে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘ধর্মঘটে কোথাও সমাবেশের ক্ষতি হয়নি। সাধারণ মানুষেরই ভোগান্তি হয়েছে কেবল। তাই আমরা আশা করব জনদুর্ভোগ এড়াতে এবং সিলেটের রাজনৈতিক ও সামাজিক সম্প্রীতির কথা বিবেচনায় রেখে এখানে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হবে না।’
ধর্মঘট ডাকলেও সমাবেশে লোকসমাগম ঘটাতে বিকল্প ব্যবস্থা রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা বিকল্প সব ধরনের ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছি। কোনো গাড়ি না চললেও ১৯ নভেম্বর সিলেটে জনতার ঢল নামবে। কেবল আলীয়া মাদ্রাসা মাঠ নয়, পুরো সিলেট সেদিন সমাবেশের নগর হবে।’
সিলেট মহানগর বিএনপির সভাপতি আবদুল কাইয়ুম জালালী পংকী বলেন, প্রশাসন ও পরিবহন শ্রমিকদের ব্যবহার করে সরকার বিএনপির সমাবেশে বাধা দেয়ার চেষ্টা করছে। আজকে বিভিন্ন জায়গায় লিফলেট বিতরণকালে পুলিশ আমাদের বাধা দিয়েছে, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করেছে।
‘এ ছাড়া একটি পেশাজীবী গোষ্ঠীকে রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করে বিতর্কিত করা হচ্ছে। আশা করছি আমাদের পরিবহন শ্রমিক ভাইয়েরাও এটা বুঝতে পারছেন। ফলে সিলেটে তারা ধর্মঘট ডাকবেন না বলেই আশা করি।’