মন্দা অনিবার্য, রাশিয়াকে দুষছে যুক্তরাজ্য
মন্দার ঝুঁকির মধ্যে জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে যুক্তরাজ্যের অর্থনীতি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। চলমান মূল্যস্ফীতির মধ্যে দেশটিতে মন্দা এখন অনিবার্য বলে মনে করেন ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। আর এর জন্য রাশিয়াকে দায়ী করছেন তিনি। সম্প্রতি সানডে টাইমস পত্রিকাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনের অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট দাবি করেন, ইউক্রেন-রাশিয়া সংঘাতের প্রভাব যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিতে পড়েছে। এতে দেশটির অর্থনীতিতে মন্দার আশঙ্কা আরও প্রকট হচ্ছে।
হান্ট বলেন, অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা নেই। পুতিনের ইউক্রেন আক্রমণ যার প্রধান কারণ। এটি একটি ‘মেইড ইন রাশিয়া মন্দা’। প্রবৃদ্ধির দিকে আমাদের প্রথম পদক্ষেপ হবে অর্থনীতিতে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনা।
গত জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশটির অর্থনীতি শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। চলমান মূল্যস্ফীতির কারণে দেশটির অর্থনীতি আরও ছোট হয়ে আসবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে মন্দা অনিবার্য বলে বিশ্বাস করেন হান্ট।
টানা দুই প্রান্তিকে জিডিপি কমলে তাকে ঐতিহ্যগতভাবে মন্দা হিসেবে অবহিত করা হয়। যুক্তরাজ্য দুই বছরের জন্য মন্দায় আটকে যেতে পারে- এমন আশঙ্কার কথা গত সপ্তাহেই জানিয়েছিল ব্যাংক অব ইংল্যান্ড।
হান্ট বলেন, আমি যা করতে পারি তা হলো, ব্যাংক অব ইংল্যান্ডকে মূল্যস্ফীতি কমাতে সাহায্য করতে পারি। কারণ অস্থিতিশীল অর্থনীতির কারণে ব্যবসায় বিনিযোগ করা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। আর পরিবারগুলোকে যে কোনো ধরনের খরচ করার আগে ভাবতে হচ্ছে যে এটি বুদ্ধিমানের কাজ হবে কি-না। এখন আমরা মন্দার মধ্যে আছি কি-না, তা আসল প্রশ্ন নয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে আমরা মন্দাকে ক্ষণস্থায়ী ও অগভীর করতে কী করতে পারি।
জেরেমি হান্ট আগামী সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী হিসেবে তার প্রথম আর্থিক বিবৃতি দেবেন। যেখানে তিনি যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার উদ্দেশে বিভিন্ন পদক্ষেপ উপস্থাপন করবেন।
বৈশ্বিক ও অভ্যন্তরীণ সংকটের জন্য রাশিয়াকে দায়ী করার ক্ষেত্রে হান্টই প্রথম নন। ওয়াশিংটনের এরূপ বিবৃতির প্রসঙ্গে এর আগে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছিলেন, নিজেদের ভুলগুলোর দোষ রাশিয়ার ওপর দেয়ার জন্য পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতকে একটি ‘লাইফলাইন’ হিসেবে ব্যবহার করছে। কিন্তু এর সঙ্গে মস্কোর কোনো সম্পর্ক নেই।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির শেষের দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে রাশিয়ার ওপর অভূতপূর্ব সংখ্যক অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। তবে তেল ও গ্যাসের বিধিনিষেধের ফলে জ্বালানির দাম লাফিয়ে বাড়তে থাকে। যার ফলে বাড়তে থাকে মূল্যস্ফীতি।