জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশ দ্রুত একটি ‘তাপ হটস্পটে’ পরিণত হচ্ছে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির দিক থেকে দেশটি এখন বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। এই তাপমাত্রা শুধু পরিবেশ নয়, বরং স্বাস্থ্য ও অর্থনীতির ওপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলছে।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে বিশ্বব্যাংকের একটি গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে এ তথ্য জানানো হয়। অনুষ্ঠানে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও বিশ্বব্যাংকের বিভিন্ন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী:
-
১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে বাংলাদেশে গড় তাপমাত্রা বেড়েছে ১.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
-
একই সময়ে অনুভূত তাপমাত্রা (heat index) বেড়েছে ৪.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
-
শুধু ২০২৪ সালে অতিরিক্ত গরমের কারণে ২ কোটি ৫০ লাখ কর্মদিবস নষ্ট হয়েছে, যার আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১.৭৮ বিলিয়ন ডলার (জিডিপির ০.৪%)।
-
রাজধানী ঢাকায় হিট ইনডেক্স জাতীয় গড়ের চেয়ে প্রায় ৬৫% বেশি। ১৯৮০ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে ঢাকার তাপমাত্রা বেড়েছে ১.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞদের মতে, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও উৎপাদনশীলতা হ্রাস পাচ্ছে। তবে সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগের মাধ্যমে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব।
প্রতিবেদনে যেসব সুপারিশ করা হয়েছে:
-
জাতীয় প্রস্তুতি ও পরিকল্পনা জোরদার করা
-
স্বাস্থ্য খাতে তাপজনিত রোগ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়ানো
-
শহরে সবুজায়ন এবং তাপপ্রতিরোধী অবকাঠামো গড়া
-
আবহাওয়া ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ও বিশ্লেষণের উন্নয়ন
-
সরকারি-বেসরকারি বিনিয়োগ ও আন্তর্জাতিক সহায়তা বৃদ্ধি
বিশ্বব্যাংক বলেছে, এই সংকট মৌসুমি নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি। তাই এখনই কার্যকর ও সমন্বিত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।