ইংল্যান্ডে স্বাস্থ্যসেবায় অসমতা আবারও সামনে এসেছে। জাতীয় স্বাস্থ্য সেবা (এনএইচএস) ইংল্যান্ডের সদ্য প্রকাশিত এক রিপোর্টে দেখা গেছে, দরিদ্র ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর মানুষরা চিকিৎসা পাওয়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের বঞ্চনার শিকার হচ্ছেন।
চলতি বছরের জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে দরিদ্র এলাকাগুলোর ৩.১% রোগী এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা শুরুর জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। তুলনায়, সবচেয়ে ধনী এলাকায় এই হার ২.৭%। বিশেষ করে পূর্ব ইংল্যান্ডে এই সমস্যা আরও প্রকট, যেখানে দরিদ্র রোগীদের মধ্যে অপেক্ষার হার ৪.৯%।
জাতিগত বৈষম্যও স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। এশীয় বা ব্রিটিশ এশীয় পটভূমির মানুষদের চিকিৎসা পাওয়ার জন্য অপেক্ষার সময় বেশি। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত রোগীদের মধ্যে মাত্র ৫৭% মানুষ ১৮ সপ্তাহের মধ্যে চিকিৎসা পান, যেখানে সাদা ব্রিটিশদের ক্ষেত্রে এই হার ৬০.৩%।
নারীরাও এই বৈষম্যের শিকার। বর্তমানে এনএইচএসের অপেক্ষমাণ তালিকায় নারীর সংখ্যা ৫৭%, এবং দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষার হারও তাদের ক্ষেত্রে তুলনামূলক বেশি। ১৯ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের মধ্যে এক বছরের বেশি অপেক্ষার হার ৩%, যেখানে ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে তা ২.৫%।
এই চিত্রে উদ্বিগ্ন সরকার ইতিমধ্যে ১০ বছর মেয়াদি একটি স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ওয়েস স্ট্রিটিং জানিয়েছেন, ‘নেইবারহুড হেলথ সেন্টার’ নামে নতুন কেন্দ্র চালু করে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্থানীয় পর্যায়ে নির্দিষ্ট লক্ষ্যভিত্তিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হবে।
তবে বিশেষজ্ঞদের মত ভিন্ন। স্বাস্থ্যনীতি বিশ্লেষক সিভা আনন্দসিভা মনে করেন, নতুন পরিকল্পনায় স্বাস্থ্যসেবায় বৈষম্য দূর করার দিকটি যথেষ্ট গুরুত্ব পায়নি এবং এটি খুব বেশি উচ্চাকাঙ্ক্ষীও নয়। তার মতে, এই বৈষম্য শুধুই একটি সামাজিক সমস্যা নয়, বরং স্বাস্থ্যব্যবস্থার দীর্ঘমেয়াদি ভারসাম্য বজায় রাখার জন্যই এটি সমাধান করা জরুরি।