যুক্তরাজ্যে ভোট দেওয়ার বয়সসীমা কমিয়ে ১৬ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে। পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনের আগেই এই পরিবর্তন কার্যকর হবে। এর ফলে ১৬ ও ১৭ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীরাও এখন থেকে জাতীয় নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে।
সরকার বলছে, অনেক তরুণ ইতোমধ্যে চাকরি করেন, কর দেন, এমনকি সেনাবাহিনীতেও যোগ দিতে পারেন—তাই তাদের ভোটাধিকার দেওয়া ন্যায্যতার দাবি পূরণ করবে।
স্কটল্যান্ড ও ওয়েলস আগে থেকেই স্থানীয় নির্বাচনে ১৬ বছর বয়সীদের ভোটাধিকার দিয়ে রেখেছে। এবার সেই সুযোগ বাড়িয়ে পুরো যুক্তরাজ্যে কার্যকর করা হচ্ছে।
ভোটার তালিকায় নাম নিবন্ধন আরও সহজ করতে ধাপে ধাপে ‘স্বয়ংক্রিয় রেজিস্ট্রেশন’ চালু করা হবে, যাতে একবার তথ্য দিলেই তা অন্যান্য সরকারি সেবায় ব্যবহার করা যায়।
ভোটার আইডি হিসেবে এখন থেকে ব্যাংক কার্ড ও ভেটেরান্স কার্ডও গ্রহণযোগ্য হবে, যাতে আরও বেশি মানুষ সহজে ভোট দিতে পারে।
বিদেশি হস্তক্ষেপ ঠেকাতে নির্বাচনী অনুদান নীতিতে কড়াকড়ি আনা হচ্ছে। এখন থেকে কোনো বিদেশি ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সহজে রাজনৈতিক দান করতে পারবে না। দান করতে চাইলে প্রমাণ দিতে হবে যে তাদের ব্যবসা বা আয় যুক্তরাজ্য বা আয়ারল্যান্ডভিত্তিক।
‘নো ইয়োর ডোনার’ নিয়ম চালু করে প্রতিটি অনুদানের উৎস যাচাই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সন্দেহজনক দানের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ লাখ পাউন্ড পর্যন্ত জরিমানা ও মিথ্যা তথ্য দিলে অপরাধ হিসেবে বিচার হবে।
সম্প্রতি ইলন মাস্ক একটি ব্রিটিশ রাজনৈতিক দলকে অনুদান দেওয়ার চিন্তা করেন, কিন্তু নতুন নিয়ম অনুযায়ী তিনি সরাসরি দান করতে পারবেন না যদি না তার প্রতিষ্ঠানের আয় যুক্তরাজ্য থেকে হয়।
নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নতুন আইন আনা হয়েছে। প্রার্থীরা এখন থেকে প্রচারপত্রে নিজের বাড়ির ঠিকানা দিতে বাধ্য নন। কেউ প্রার্থী বা প্রচারণার কর্মীদের ভয়ভীতি বা হয়রানি করলে তা গুরুতর অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এমন অপরাধে কেউ দোষী সাব্যস্ত হলে, ভবিষ্যতে সে আর কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না।
সরকার বলছে, এই সংস্কারের মাধ্যমে গণতন্ত্র আরও অংশগ্রহণমূলক, স্বচ্ছ ও নিরাপদ হবে। তরুণদের সম্পৃক্ত করা, বিদেশি প্রভাব ঠেকানো এবং নির্বাচন ব্যবস্থায় আস্থা ফিরিয়ে আনাই মূল লক্ষ্য।
সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান