জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আগামীর নতুন বাংলাদেশে সিলেট হবে এনসিপির অন্যতম দুর্গ। তিনি বলেন, সিলেটবাসী ইতোমধ্যেই তাদের অংশগ্রহণের মাধ্যমে তা প্রমাণ করেছেন।
শুক্রবার বিকেলে সিলেট কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে ‘জুলাই পদযাত্রা’ শেষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
নাহিদ তার বক্তব্যের শুরুতে সিলেটবাসীকে অভিবাদন জানিয়ে বলেন, “প্রিয় সিলেটবাসী, আপনারা কেমন আছেন?” এরপর তিনি বলেন, “সিলেট যুগের পর যুগ ধরে বাংলাদেশের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে রেখেছে। ১৯৪৭ সালে গণভোটে পূর্ববঙ্গের সঙ্গে থাকার সিদ্ধান্ত ছিল সাহসী এক পদক্ষেপ। স্বাধীনতা সংগ্রাম এবং সম্প্রতি জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও সিলেট ছিল অগ্রভাগে। কিন্তু বৃটিশ আমল থেকে শুরু করে পাকিস্তান এবং পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ও সিলেটবাসীকে তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে—বিশেষ করে গ্যাস, বালু-পাথরের মতো খনিজ সম্পদের বেলায়।”
তিনি বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে এই জেলার ১৭ জন সাহসী মানুষ শহিদ হয়েছেন, যাদের মধ্যে এটিএম তুরাব অন্যতম। আমরা সেই শহিদদের রক্তের শপথ নিয়েই সিলেট থেকে নতুন বাংলাদেশ গড়ার যাত্রা শুরু করেছি।”
প্রবাসীদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, “লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশিদের একটি বড় অংশ সিলেটি। তারা লন্ডন জয় করেছেন, আর এখন নিজের শিকড়ে ফিরে সিলেটকেও এগিয়ে নিচ্ছেন। প্রবাসীদের শ্রমে-ঘামে দেশের অর্থনীতি সচল। আমরা চাই, তারা রাষ্ট্র পরিচালনায়ও সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন এবং ভোটাধিকার নিশ্চিত হোক।”
সিলেটকে একটি সমৃদ্ধ ও পরিকল্পিত শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানের উন্নয়নে এনসিপি নিরলসভাবে কাজ করবে। নতুন সংবিধান, বিচার সংস্কার এবং জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমরা রাজপথে নেমেছি। সেই সংবিধানে সিলেটের মর্যাদার কথাও লিপিবদ্ধ থাকবে।”
তিনি আরও ঘোষণা দেন, “আগামী ১৬ আগস্ট আমরা আবারও শহীদ মিনারে জমায়েত হবো—জুলাই সনদ বাস্তবায়নের দাবিতে। ইনশাল্লাহ, আমরা তা আদায় করবো।”
সমাবেশে নাহিদ ইসলাম বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সিলেটের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা যেভাবে অংশ নিয়েছে, তা পুরো জাতিকে অনুপ্রাণিত করেছে। এটাই প্রমাণ করে, সিলেট হবে এনসিপির একটি অটল দুর্গ।”
সভায় সভাপতিত্ব করেন এনসিপি সিলেট মহানগর কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মো. খায়রুল ইসলাম চৌধুরী এবং পরিচালনা করেন উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সমন্বয়ক সারজিস আলম। আরও বক্তব্য রাখেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন পাটোয়ারী, হাসনাত আব্দুল্লাহ, কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক অর্পিতা দাশ, সিলেটের মুখ্য সমন্বয়ক নাজিম উদ্দিন সাহান, ডা. এহতেশাম, ‘জুলাই অভ্যুত্থান’-এর স্লোগানমাস্টার বাকের ও ডা. আব্দুল্লাহ প্রমুখ।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন এনসিপির কেন্দ্রীয় নেত্রী ডা. তাসনিম জারা এবং অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।