জেলেদের জালে আটকে শ্বাসরোধে মারা যাচ্ছে হালদার ডলফিন, গবেষণায় তথ্য
বিপন্নপ্রায় গাঙ্গেয় ডলফিনের অন্যতম আবাসস্থল চট্টগ্রামের হালদা নদী। যেখানে মিঠাপানির এই ডলফিন বা শুশুকের ডুবসাতার মোহিত করে যে কাউকেই। কিন্তু গত কয়েকবছর ধরে প্রায় নিয়মিত বিরতিতেই হালদায় মারা পড়ছে ডলফিন। তাতে বিপন্ন হচ্ছে নদীর প্রাণ-প্রকৃতি। হালদার ডলফিনের এমন অস্বাভাবিক মৃত্যুর কারণ খুঁজে বের করতে গবেষণায় নামেন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
সম্প্রতি বিশ্বখ্যাত জার্নাল উইলীতে প্রকাশিত হয় গবেষণার ফলাফল। তাতে শুধু মৃত্যুর কারণই নয় তারা তুলে আনেন এই জাতীয় ডলফিনের শারীরবৃত্তিয় গঠন, জীবন প্রক্রিয়া, খাদ্যাভ্যাসসহ নানা বিষয়। গবেষণায় জানা যায়, পানি দূষণ, জীবাণু সংক্রমণ কিংবা খাদ্যে বিষক্রিয়ায় নয়, হালদার ডলফিন মরছে জেলেদের জালে আটকে শ্বাসরোধে।
মিঠা পানির ডলফিন নিয়ে এটিই দেশে প্রথম গবেষণা উল্লেখ করে এটি এ ধরণের গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করলো বলছেন গবেষকরা। এখন বিলুপ্তির হাত থেকে ডলফিনকে রক্ষায় কিছু সুপারিশও তুলে ধরেছেন গবেষকরা।
গবেষক দলের সদস্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত কুমার শীল জানান, ময়নাতদন্তে উঠে এসেছে হালদায় মারা যাওয়া ডলফিনগুলো পানির দূষণ, খাদ্যে বিষক্রিয়া কিংবা জীবানু সংক্রমণে নয় বরং জেলেদের জালে আটকে শ্বাসরোধ হয়েই মারা গেছে।
গবেষক দলের অন্যতম সদস্য চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর জুনায়েদ সিদ্দিকী বলেন, দেশে মিঠা পানির ডলফিনের বায়োলজিক্যাল এবং এনাটমিক্যাল গবেষণা এটাই প্রথম। এটি এ ধরণের গবেষণার দ্বার উন্মুক্ত করলো বলছেন গবেষকরা।
এখন বিলুপ্তির হাত থেকে ডলফিনকে রক্ষায় বেশকিছু সুপারিশও তুলে ধরেছেন হালদা গবেষক ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর মনজুরুল কিবরিয়া। জানান, ডলফিন রক্ষায় নির্বিচারে মাছ ধরা ও যান্ত্রিক নৌযান চলাচল বন্ধ করার কোন বিকল্প নেই।
তথ্য বলছে, গত ৫ বছরে হালদায় অন্তত ৪০টি ডলফিনের মৃত্যু ঘটেছে, যার বেশিরভাগই অস্বাভাবিক।