ব্রিটিশ বাংলাদেশি হুজহু’র ১৩তম অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠিত
ব্রিটিশ বাংলাদেশি হুজহু’র (Who’s Who) ১৩তম প্রকাশনা ও অ্যাওয়ার্ড ২০২২ অনুষ্ঠানের জাঁকজমকপূর্ণ আসর অনুষ্ঠিত হলো। ৮ই নভেম্বর মঙ্গলবার লন্ডনের অভিজাত ভেন্যু মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড হলে অনুষ্ঠিত হয় এবারের আয়োজন।
নিজ নিজ পেশায় অসাধারণ সাফল্যের স্বাক্ষর রেখে এগিয়ে চলছেন, এমন দশজন ব্রিটিশ বাংলাদেশিকে এওয়ার্ড দিয়ে সম্মানিত করে বৃটিশ বাংলাদেশী হুজ হু। বাংলা মিরর গ্রুপের এই প্রকাশনায় এবার উঠে এসেছে ২৭০ জন বৃটিশ বাংলাদেশীর সাফল্যগাঁথার কথা।
বৃটিশ বাংলাদেশী হুজহু যুক্তরাজ্যে বসবাসরত বংলাদেশীদের বিভিন্ন বিষয়ে উল্লেখযোগ্য অবদান ও উৎকর্ষের বিবরণ নিয়ে প্রকাশিত হয় প্রতি বছর। এ বছরও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এবারের প্রকাশনায় সংযুক্ত হয়েছে নতুন নতুন প্রতিভার সাফল্যের কথা। নতুনত্ব সমৃদ্ধ করেছে এ প্রকাশনাকে। বৃটিশ—বাংলাদেশী তৃতীয় প্রজন্মকে যুক্ত করে হুজহু কলেবর বৃদ্ধি পেয়েছে, আঙ্গিকেও শোভিত হয়েছে নতুনদের অবদানে।
হুজহুর সফলতা পুরানো নতুনের সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে এসেছে। ২০০৮ সালে বৃটিশ—বাংলাদেশীদের হুজহু যাত্রা শুরু করেছিলো কমিউনিটির গুণিজনদের উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা লিপিবদ্ধ করে তাদের স্মরণীয় করে রাখার জন্য। হুজহু বিশ্বস্ততার সাথে সে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে বললেন হুজহুর বিগত সময়ের ও এবারের এওর্য়াডাপ্রাপ্তরা।
বৃটিশ বাংলাদেশী হুজহু থেকে সহজেই কমিউনিটির অবদানের বিষয়টি জানা যায়। বৃটেনে বাংলাদেশী কমিউনিটির প্রবীণ ও নবীনরা বৃটিশ কমিউনিটিতে যে ভূমিকা রেখে যাচ্ছেন তা সত্যি প্রশংসা করার মত বললেন আগত অতিথিরা।
অনুষ্ঠানে বৃটিশ বাংলাদেশী হুজহু এর প্রধান সম্পাদক আব্দুল করিম গণি বলেন, কোভিড মহামারীর ফলে আমাদের ইভেন্ট এবং বার্ষিক প্রকাশনা বন্ধ করতে হয়েছিল। তারপরও কমিউিনিটির সহযোগিতায়, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রকাশনা এবং গালা অনুষ্ঠানটি আবার শুরু করা হয়েছে।
তিনি বলেন, প্রথম থেকেই এই প্রকাশনা আমাদের কমিউনিটির নবীনদের উৎসাহ ও উদ্দীপনা যুগিয়ে আসছে। প্রবীণদের সাফল্যের কথার ভবিষ্যতে নবীনদের অবদান সুন্দরভাবে সংযোজিত হবে।
জনপ্রিয় উপস্থাপিকা নাদিয়া আলি ও ব্যারিস্টার আনোয়ার বাবুল এর পরিচালনায়, এই আয়োজনের দীর্ঘ ১৩ বছরের পথচলা নিয়ে সূচনা বক্তব্য রাখেন প্রকাশনার নির্বাহী সম্পাদক সোহানা আহমেদ। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বৃটিশ এমপি, মেয়র, ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ মূলধারা ও কমিউনিটির বিভিন্ন স্তরের প্রভাবশালী নেতৃবৃন্দ।
দ্যা লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার অ্যাঞ্জেলা রেনার তার বক্ততায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের বিভিন্ন কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং ব্রিটিশ সমাজের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে তারা যে অমূল্য অবদান রাখছেন তার উপরও জোর দেন তিনি। এছাড়া অনুষ্ঠানে এওয়ার্ড প্রাপ্তদের অভিনন্দনও জানান।
ব্রিটিশ বাংলাদেশি এমপি আপসানা বেগম ব্রিটিশ বাংলাদেশিদের অর্জনের ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং তিনি যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশী কমিউনিটিকে মূলধারার রাজনীতিতে আরও যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
এবারের এওয়ার্ড প্রাপ্তরা হলেন আকলাকুর রহমান আক্কে, মোহাম্মদ শামসুর রহমান, আমিন বাবর চৌধুরী, নাজমুল ইসলাম নুরু, সেলিম চৌধুরী, ব্যারিস্টার লুৎফুর রহমান, মেয়র হেনা চৌধুরী, সাইদুর রহমান রানু , সৈয়দ আফসার উদ্দিন, টিপু রহমান ।
জমকালো এই আয়োজনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার অ্যাঞ্জেলা রেনার, ফয়সল চৌধুরী এমবিই এমএসপি, স্যাম টেরি এমপি, আপ্সানা বেগম এমপি, ক্যামডেনের মেয়র নাসিম আলী, টাওয়ার হ্যামলেটসের স্পিকার শফি আহমেদ, রামসগেটের মেয়র রওশন আরা, সুইন্ডন সিটির মেয়র প্রমুখ।
এতে মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিলো — চ্যানেল এস, জি টেন ডিজাইন এন্ড প্রিন্ট, ইমপ্রেস মিডিয়া। পুরো অনুষ্ঠানের সার্বিক সহযোগিতায় মেরিডিয়ান গ্রান্ড, ইভেন্ট পরিচালনায় পার্ল এডভারটাইজিং এবং একমাত্র চ্যারিটি পার্টনার হিসেবে রয়েছে — হিউম্যান রিলিফ ফাউন্ডেশন ।
স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে— প্রাইম এস্টেট এজেন্ট, রোজেনবার্গ ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস, ড্রিম স্পা, লন্ডন টি এক্সচেঞ্জ, এসিসি ট্যাক্স কন্সালট্যান্সি, এ এইছ এন্ড জেড লিমিটেড, এন আর বি হলিডে রিসোটর্স জেএমজি এয়ার কার্গো, ব্লুস্টোন ফাইন্যান্স, এপেক্স একাউন্টেন্সী, পার্পল আই, ইউরোশিয়া ফুড সার্ভিস, ইউনি সফট ।
এছাড়া আরো সহযোগিতায় রয়েছে — ভ্যানটেজ এক্সিডেন্ট ম্যানেজম্যান্ট, সিটিগেইট একাউন্টেট, ইভকো, মীরা গার্ডেন হোটেল, এপিজি প্রপার্টি ম্যানেজম্যান্ট, ব্রিট বাজার, এবল কেয়ার, প্রিয়, ইভারেড কন্সট্রাকশন এবং রেসকিউ এইড।
এই পুরো আয়োজনে মূল সহযোগিতায় এবং সুস্বাদু খাবার পরিবেশনে ছিলো মেরিডিয়ান গ্র্যান্ড।
অনুষ্ঠানের ফাঁকে ফাঁকে চলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিলেতের জনপ্রিয় সংগীত শিল্পী সাদিয়া আফরোজ চৌধুরী, সুমন শরীফ।