বর্তমান সময়ে হেডফোন দৈনন্দিন জীবনের অপরিহার্য একটি উপকরণে পরিণত হয়েছে। গান শোনা, ভিডিও দেখা কিংবা ফোনে কথা বলা—প্রতিটি ক্ষেত্রেই হেডফোনের ব্যবহার বেড়েই চলেছে। বাজারে এখন মূলত দুই ধরনের হেডফোন পাওয়া যায়—তারযুক্ত এবং তারবিহীন। তারবিহীন হেডফোন আবার ব্লুটুথ, ওয়াইফাই/আরএফ ও ইনফ্রারেড—এই তিন ধরনের হয়ে থাকে। জনপ্রিয়তার দিক থেকে এগিয়ে রয়েছে ব্লুটুথ হেডফোন।
ব্যবহারকারীদের বড় একটি অংশের কাছে ব্লুটুথ হেডফোনকে বেশি সুবিধাজনক মনে হয়। তারের ঝামেলা নেই, চার্জ দিয়ে সহজেই ব্যবহার করা যায় এবং চলাচলের সময়ও বাধা সৃষ্টি করে না বলে এসব হেডফোন দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তবে প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুবিধার দিক থেকে ব্লুটুথ এগিয়ে থাকলেও অডিও কোয়ালিটির ক্ষেত্রে সব সময় সেরা নয়।
বাজারে ‘ট্রু ওয়্যারলেস স্টেরিও’ (টিডব্লিউএস) হেডফোন দীর্ঘদিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছে, তবুও তারযুক্ত হেডফোনের চাহিদা কমেনি। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর কয়েকটি প্রধান কারণ রয়েছে। তারযুক্ত হেডফোনে আলাদা করে চার্জ দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, দামও তুলনামূলক কম। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো—এগুলোর অডিও সরাসরি অ্যানালগ কানেকশনের মাধ্যমে আসে, ফলে সাউন্ড কোয়ালিটি সাধারণত বেশি পরিষ্কার ও নিখুঁত হয়।
অন্যদিকে ব্লুটুথ হেডফোনে শব্দ পাঠানোর সময় বিভিন্ন কোডেক ব্যবহৃত হয়, যা কিছুটা হলেও অডিওর মানে প্রভাব ফেলে। বিশেষ করে অডিও বা ভিডিও এডিটিং–সংক্রান্ত কাজে নিযুক্ত ব্যক্তিরা তাই এখনও তারযুক্ত হেডফোনকেই বেশি নির্ভরযোগ্য মনে করেন।
এ ছাড়া ব্লুটুথ হেডফোনে চার্জিং ও ব্যাটারির স্থায়িত্ব একটি বড় বিষয়। দীর্ঘ সময় ব্যবহারের পর ব্যাটারি ফুরিয়ে গেলে পুনরায় চার্জ দিতে হয়। তারযুক্ত হেডফোনে এসব ঝামেলা নেই, পাশাপাশি অডিও ট্রান্সমিশনে লেটেন্সি বা দেরির আশঙ্কাও কম।
সংক্ষেপে, দৈনন্দিন ব্যবহার—যেমন গান শোনা বা কল করার মতো কাজে ব্লুটুথ হেডফোন সুবিধাজনক হলেও, অডিও কোয়ালিটি যেখানে মুখ্য, বিশেষত পেশাদার কাজের ক্ষেত্রে—তারযুক্ত হেডফোনই এখনো সেরা বলে বিবেচিত।
সূত্র: টিভি নাইন বাংলা