সিলেটে বহুল আলোচিত রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক বুধবারও শেষ হয়নি। আসামিপক্ষের আইনজীবীর সময় চাওয়ার পর আদালত আগামীকাল বৃহস্পতিবার অবশিষ্ট যুক্তিতর্কের জন্য নতুন দিন ঠিক করেছেন। সিলেট মহানগর দায়রা জজ মুন্সী আব্দুল মজিদের আদালতে গত মঙ্গলবার থেকে টানা যুক্তিতর্ক চলছে।
রাষ্ট্রপক্ষের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, রাষ্ট্রপক্ষ মঙ্গলবারই তাদের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন সম্পন্ন করেছে। বুধবার হাজতে থাকা একমাত্র আসামি এএসআই আশেক আলীর আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন শামীম সময় আবেদন করলে আদালত বৃহস্পতিবার নতুন তারিখ নির্ধারণ করেন।
এর আগে মঙ্গলবার পাঁচ পলাতক আসামির অনুপস্থিতি এবং হাজতে থাকা আসামি আশেক এলাহীর আইনজীবীর উপস্থিত না থাকার ফলে আদালত বুধবারকে যুক্তিতর্কের ‘শেষ সুযোগ’ হিসেবে নির্ধারণ করেছিলেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার আবুল ফজল চৌধুরী বলেন, বিচারপ্রক্রিয়া শেষ পর্যায়ে থাকলেও পলাতক আসামিদের অনুপস্থিতি মামলাকে জটিল করে তুলছে। আদালত সূত্র জানিয়েছে, যুক্তিতর্ক শেষ হলে যেকোনো সময় রায়ের তারিখ ঘোষণা করা হতে পারে।
মামলার প্রধান আসামি বন্দরবাজার ফাঁড়ির সাবেক ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভুঁইয়া ৪ আগস্ট হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে ১০ আগস্ট কারাগার থেকে বের হন। পরে তার জামিন স্থগিত হলেও তিনি নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ না করে পলাতক রয়েছেন। রায়হানের মা অভিযোগ করেন, যুক্তিতর্ক চলাকালেই আকবরকে গোপনে জামিন দেওয়া হয়েছে এবং আসামিপক্ষ বিভিন্নভাবে বিচার বিলম্বিত করার চেষ্টা করছে। ১৫ জুলাই প্রথম যুক্তিতর্ক শুরু হলেও এখনো তা শেষ না হওয়ায় একাধিক জামিনপ্রাপ্ত আসামি পলাতক হয়েছেন।
২০২০ সালের ১০ অক্টোবর রাতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে রায়হানকে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠে; পরদিন তার মৃত্যু হয়। তদন্তে নির্যাতনের সত্যতা প্রমাণিত হলে ছয় পুলিশ সদস্যকে আসামি করে ২০২১ সালের ৫ মে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়। ৬৯ সাক্ষীর মধ্যে ৬৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে, এখন চলছে চূড়ান্ত যুক্তিতর্ক। আদালত জানায়—হাজতে থাকা আসামি আশেক এলাহীর পক্ষে যুক্তিতর্ক শোনা হবে, তবে পলাতক আসামিদের ক্ষেত্রে নয়। যুক্তিতর্ক শেষ হলে দ্রুতই রায় ঘোষণার সম্ভাবনা রয়েছে।