পাবনার ঈশ্বরদীতে ৮টি কুকুরছানা বস্তাবন্দি করে পুকুরে ফেলে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া গৃহবধূ নিশি রহমান (৩৮) বর্তমানে কারাগারে তার দুই বছরের শিশুর সঙ্গে রয়েছেন। বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার সৃষ্টি করেছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) বিকেলে ঈশ্বরদী থানা থেকে নিশি রহমানকে পাবনা আমলি আদালতে নেওয়া হয়। আমলি-২ আদালতের বিচারক তরিকুল ইসলাম তাকে জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ওই সময় দেখা যায়, তার সঙ্গে দুই বছরের একটি ছেলে রয়েছে। অভিযুক্ত নারীর পরিবার জানিয়েছে, তার বড় সন্তান মেয়ে।
নিশি রহমান ঈশ্বরদী উপজেলা পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগের কর্মকর্তা হাসানুর রহমান নয়নের স্ত্রী। তিনি জানিয়েছেন, “আমার দুই ছেলে ও এক মেয়ে। কারাগারে ছোট ছেলে মায়ের সঙ্গে রয়েছে।”
স্থানীয় সমাজসেবক রঞ্জন সরকার বলেন, “নিশি রহমানকে কেন তার সন্তান নিয়ে কারাগারে নিতে হবে, তা মানবিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ। আমরা আশা করি, কুকুরছানা হত্যার ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঘটনার বিবরণ অনুযায়ী, ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবনের পাশে থাকা ‘টম’ নামে কুকুরটি সম্প্রতি ৮টি বাচ্চা প্রসব করে। গত সোমবার সকাল থেকে ছানাগুলো অদৃশ্য হয়। পরে জানা যায়, নিশি রহমান এই কুকুরছানাগুলো বস্তাবন্দি করে উপজেলা পরিষদের পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে পুকুর থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে ঈশ্বরদী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আকলিমা খাতুন মামলা দায়ের করেন। রাতেই নিশি রহমানকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় তিনি বলেন, “বাচ্চাগুলোকে মারার উদ্দেশ্য ছিল না, সিঁড়ির পাশে থাকায় সন্তানদের জন্য ঝুঁকি হতে পারে ভেবে পুকুরের কাছে রেখেছি।”
এদিকে, সন্তানহারা মা কুকুরটিকে নতুন চারটি কুকুরছানা দেওয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, নতুন ছানাগুলোকে মা কুকুরটি নিজের মতো যত্ন করছে এবং দুধ খাওয়াচ্ছে।