ভারতে দুই বাংলাদেশিসহ পাঁচজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন কলকাতার একটি আদালত। তাদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামায়াতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি)-এর সদস্য হিসেবে দেশজুড়ে বোমা বিস্ফোরণ ও নাশকতা পরিকল্পনার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার এ রায় দেন কলকাতার সিটি সেশনস কোর্টের বিশেষ এনডিপিএস বিচারক রোহন সিনহা।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়, দণ্ডপ্রাপ্ত দুই বাংলাদেশি হলেন—জামালপুরের আনোয়ার হোসেন ফারুক ওরফে এনাম এবং মোহাম্মদ রুবেল ওরফে রফিক। বাকি তিনজনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানের মাওলানা ইউসুফ শেখ (৩১), আসামের বরবেটার বাসিন্দা মোহাম্মদ সাহিদুল ইসলাম (২২) এবং জাবিরুল ইসলাম (৩০) অন্তর্ভুক্ত। মোহাম্মদ রুবেল ও জাবিরুল আগেও ২০১৪ সালের খাগড়াগড় বোমা বিস্ফোরণ মামলায় দণ্ডিত হয়েছিলেন।
আদালতের রায়ে মাওলানা ইউসুফকে ভারত সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে (ধারা ১২১এ) অতিরিক্ত যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে। দুই বাংলাদেশি নাগরিককে ফরেনার্স অ্যাক্টের ধারা ১৪-এর অধীনেও দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ) তদন্তে উঠে আসে, জেএমবি সদস্যরা অবৈধ পথে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত পার হয়ে উত্তর ২৪ পরগনায় প্রবেশের পরিকল্পনা করেছিল। তাদের লক্ষ্য ছিল উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন স্থানে বোমা হামলা চালানো। তদন্তকারী কর্মকর্তাদের দাবি—এ নাশকতার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশে শরিয়াভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পথে ভারতের ‘বাধা’ দূর করা, পাশাপাশি রোহিঙ্গা ও কাশ্মীর ইস্যুতে প্রতিশোধ নেওয়া।
২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে এসটিএফ বনগ্রাম, বসিরহাট, কোচবিহার এবং আসাম থেকে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে। তখন তাদের কাছ থেকে বিস্ফোরক, আইইডি তৈরির সরঞ্জাম, হামলার নকশা, সংগঠনের কৌশলগত নথি, নগদ টাকা, ল্যাপটপ ও এসডি কার্ড উদ্ধার করা হয়। তবে প্রমাণের অভাবে অভিযুক্ত আবদুল কালামকে মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।