জুলাই অভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আপিল না করলে তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। আপিল করার শেষ সময় ১৭ ডিসেম্বর।
শনিবার নির্বাচনবিষয়ক এক কর্মশালায় নির্বাচন কমিশনের জ্যেষ্ঠ সচিব আখতার আহমেদ জানান, আইন অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দণ্ডপ্রাপ্তদের ভোটার তালিকা থেকে নাম মুছে ফেলতে হয়। তবে দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি আপিল করলে, আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আপিল না থাকলে তাঁদের নাম কর্তন করা হবে।
এর আগে ১৭ নভেম্বর ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং একই মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেয়। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করে। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি জুলাই আন্দোলনের শহীদ পরিবার ও আহতদের ক্ষতিপূরণের নির্দেশও দেওয়া হয়।
রায় ঘোষণার পর দিন প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম জানান, রায় ঘোষণার ৩০ দিনের মধ্যে আপিল করতে হবে; এরপর কোনো আপিল গ্রহণযোগ্য হবে না। আইনের ২১ নম্বর ধারায় আপিলের বিধান ও ৬০ দিনের মধ্যে আপিল নিষ্পত্তির নির্দেশ রয়েছে। ভোটার তালিকা আইনের ১৩(ঘ) ধারায়ও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে কেউ ভোটার তালিকায় থাকতে পারবেন না।
নির্বাচন কর্মকর্তাদের মতে, শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান সম্ভবত আপিল করবেন না। সেক্ষেত্রে ১৭ ডিসেম্বরের পরে তাঁদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে।
কর্মশালায় সচিব আখতার আহমেদ আরও জানান, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত তারিখ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন এখনো তফসিল ঘোষণা করেনি। অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষণার ভিত্তিতে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে রোজার আগে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তফসিল ঘোষণার সম্ভাবনাও রয়েছে।
তিনি জানান, এবার সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি গণভোটও হবে। এতে বুথের সংখ্যা বাড়ানোসহ বিভিন্ন প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নির্বাচন আয়োজনের জন্য ইসি প্রস্তুত বলেও তিনি উল্লেখ করেন। কর্মশালাটি আয়োজন করে ইউএনডিপি এবং রিপোর্টার্স ফোরাম ফর ইলেকশন অ্যান্ড ডেমোক্রেসি (আরএফইডি)।