ভূমিসেবা কার্যক্রম পুরোপুরি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে চলে আসায় জমি কেনাবেচায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বেড়েছে। একই সঙ্গে ঝুঁকিপূর্ণ ও অবৈধ মালিকানাভুক্ত কিছু জমির ক্ষেত্রে জারি হয়েছে কঠোর নিষেধাজ্ঞা। ডিজিটাল ভূমিসেবার আওতায় বর্তমানে ছয় শ্রেণির জমি বিক্রি সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব জমি বিক্রির চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের লক্ষ্য হলো—ভূমিসেবা নাগরিকদের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া এবং হয়রানিমুক্ত ও স্বচ্ছ ব্যবস্থায় ভূমির মালিকানা নিশ্চিত করা। এ উদ্দেশ্যে ডিজিটাল ভূমিসেবা বাস্তবায়নে প্রায় এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
তবে ভূমি কেনার ক্ষেত্রে ক্রেতাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সব ভূমি-সংক্রান্ত তথ্য একক ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে সংযুক্ত থাকায় জালিয়াতি বা অবৈধ মালিকানা গোপন করা প্রায় অসম্ভব। তাই জমি কেনার আগে মালিকানা যাচাই করা অত্যন্ত জরুরি।
ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় যেসব ছয় শ্রেণির জমি বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে, সেগুলো হলো—
১. জাল রেকর্ডভিত্তিক মালিকানার জমি
জাল রেকর্ড ব্যবহার করে যারা অতীতে জমির মালিকানা অর্জন করেছেন, তারা এসব জমি বিক্রি করতে পারবেন না। যাচাইয়ের পর রেজিস্ট্রেশন তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল করা হবে এবং আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
২. জাল নামজারিভিত্তিক জমি
ভুয়া নামজারি বা জাল দলিলের মাধ্যমে মালিকানা দাবি করা জমির বিক্রি নিষিদ্ধ। ডিজিটাল সিস্টেমের মাধ্যমে এসব জমির লেনদেন বন্ধ করা হবে।
৩. ভুয়া দাখিলাভিত্তিক জমি
দাখিলা জালিয়াতির মাধ্যমে দখল করা জমি বিক্রির চেষ্টা করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
৪. এজমালি সম্পত্তি
একাধিক ওয়ারিশের মালিকানাধীন জমি সব মালিকের সম্মতি ছাড়া বিক্রি করা যাবে না। তবে বৈধ বাটোয়ারা দলিল থাকলে নিজের অংশ বিক্রি করা যাবে।
৫. খাসজমি
সরকার কর্তৃক ৯৯ বছরের জন্য দেওয়া খাসজমি বিক্রি সম্পূর্ণ অবৈধ। এমন লেনদেনে জড়িত হলে বিক্রেতা ও ক্রেতা উভয়ই শাস্তির আওতায় পড়বেন।
৬. জবরদখলকৃত জমি
জবরদখলের মাধ্যমে দখল করা জমি বিক্রি করা যাবে না। ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ আইন, ২০২৩ অনুযায়ী এ ধরনের অপরাধে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।