জাতীয় প্রতিরক্ষা জোরদার করতে নতুন ‘হোল অব সোসাইটি’ কৌশলের অংশ হিসেবে কিশোর ও তরুণদের জন্য সশস্ত্র বাহিনীতে বেতনভিত্তিক ‘গ্যাপ ইয়ার’ কর্মসূচি চালুর পরিকল্পনা নিয়েছে যুক্তরাজ্য। তরুণদের মধ্যে সামরিক পেশার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি এবং সেনা নিয়োগ বাড়ানোই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।
লন্ডনভিত্তিক দৈনিক দ্য আই পেপার জানিয়েছে, ইউরোপজুড়ে রাশিয়াকে কেন্দ্র করে চলমান উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ তরুণদের কাছে সামরিক ক্যারিয়ারকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে এই কর্মসূচি চালু করতে চায় দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
ব্রিটিশ রেডিও স্টেশন এলবিসির তথ্যমতে, প্রাথমিকভাবে ২০২৬ সালের শুরুতে ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী প্রায় ১৫০ জন তরুণ এই কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাবেন। ভবিষ্যতে চাহিদা বাড়লে বছরে এক হাজারের বেশি তরুণকে অন্তর্ভুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের।
ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর ইউরোপজুড়ে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। এরই মধ্যে ফ্রান্স, জার্মানি ও বেলজিয়ামসহ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ তরুণদের জাতীয় সেবায় যুক্ত করতে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
যুক্তরাজ্যের প্রস্তাবিত কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া তরুণদের সক্রিয় সামরিক অভিযানে পাঠানো হবে না। বেতনের চূড়ান্ত অঙ্ক এখনো নির্ধারিত না হলেও প্রাথমিক সেনা সদস্যদের সমমানের বেতন দেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছে এলবিসি, যা বছরে আনুমানিক ২৬ হাজার পাউন্ড।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেনাবাহিনীতে অংশগ্রহণকারীদের দুই বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হবে, যার মধ্যে প্রথম ১৩ সপ্তাহ থাকবে মৌলিক প্রশিক্ষণ। নৌবাহিনীর ক্ষেত্রে এই কর্মসূচির মেয়াদ হবে এক বছর। রয়্যাল এয়ার ফোর্স (আরএএফ) এখনো তাদের কর্মসূচির কাঠামো চূড়ান্ত করছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী জন হিলি দ্য আই পেপার-কে বলেন, এটি যুক্তরাজ্যের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় একটি নতুন যুগের সূচনা, যা তরুণদের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করবে।
এর আগে যুক্তরাজ্যের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল রিচার্ড নাইটন রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকির বিষয়ে সতর্ক করে বলেন, ‘হাইব্রিড হুমকি’ দ্রুত বাড়ছে এবং যুক্তরাজ্য নিয়মিত সাইবার হামলার মুখে পড়ছে।
উল্লেখ্য, চলতি বছর যুক্তরাজ্য সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা খাতে ব্যয় মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।