নোয়াখালীর হাতিয়ার জাহাজমারা ইউনিয়নের কাটাখালী গ্রামে তৃতীয় বিয়ে করায় এক ব্যক্তি পায়ে শিকল বেঁধে আটকে রেখেছেন তার প্রথম স্ত্রী। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
পরিবারের সম্মতিতে প্রায় তিন বছর আগে বিয়ে হয় আব্দুর রহমান ও হাসিনা বেগমের। বিয়ের সময় গ্রাম্য প্রথা অনুযায়ী জামাইকে দেওয়া হয় আসবাবপত্র ও উপহার। শুরুতে সংসার স্বাভাবিক থাকলেও কিছুদিন পরই বাড়তে থাকে অশান্তি। সম্পর্কের টানাপড়েনের মধ্যেই আব্দুর রহমান দ্বিতীয় বিয়ে করেন এবং আলাদা বসবাস শুরু হয় দম্পতির।
এরপর আরও একবার বিয়ে করার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। কিন্তু এতে স্ত্রী হিসেবে হাসিনা বেগম নিজের অধিকার ফিরে না পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে সুযোগ পেয়ে তিনি স্বামীকে ধরে এনে পায়ে শিকল বেঁধে ঘরে আটক রাখেন এবং বাবার পক্ষ থেকে বিয়েতে দেওয়া টাকাপয়সা ফেরত চান।
ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা ভিড় জমায় হাসিনা বেগমের বাড়িতে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কয়েকবার গ্রাম্য সালিশ হলেও দাম্পত্য সমস্যার সমাধান হয়নি। প্রথম স্ত্রীর ভরণপোষণও দিচ্ছিলেন না আব্দুর রহমান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে বাজার থেকে ধরে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়।
হাসিনা বেগম বলেন, “বিয়ের পর থেকেই বিভিন্নভাবে নির্যাতন করত। এরপর আরও দুটি বিয়ে করেছে। বহু চেষ্টা করেও সমাধান পাইনি, তাই তাকে ধরে এনেছি। পালিয়ে যেতে না পারে—এ কারণে শিকল দিয়ে রেখেছি।”
অন্যদিকে আব্দুর রহমান দাবি করেন, তিনি তৃতীয় বিয়ে করেননি; তবে দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করেন। তার অভিযোগ, তাকে ধরে এনে মারধর করা হয়েছে এবং প্রথম স্ত্রীর “উগ্র আচরণের” কারণেই তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন।
হাসিনার পরিবার জানায়, দুই বছর ধরে জামাই মেয়ের খোঁজ নেননি। এখন সামাজিকভাবে সমস্যার সমাধান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জাহাজমারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ খোরশেদ আলম জানান, এ ঘটনায় এখনো কেউ কোনো লিখিত অভিযোগ জমা দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।