রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ক্ষমতার অপব্যবহার ও জালিয়াতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ রেহানাকে সাত বছর এবং তার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিককে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪-এর বিচারক মো. রবিউল আলম। এ রায়কে স্বীকৃতি না দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) এপি–কে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় লেবার পার্টি জানায়, টিউলিপ সিদ্দিক ন্যায্য বিচার পাওয়ার সুযোগ পাননি এবং তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের বিস্তারিত তথ্যও কখনো জানানো হয়নি। তাই এই রায়কে তারা বৈধ বলে মানতে পারছে না।
ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-কে টিউলিপ সিদ্দিক বলেন, রায়টি “ত্রুটিপূর্ণ এবং প্রহসনমূলক”। তিনি আশা করেন, আন্তর্জাতিক মহল এ রায়কে যথাযথভাবে “অবজ্ঞা” করবে। নিজের রাজনৈতিক অবস্থান সম্পর্কে তিনি জানান, তার মনোযোগ সবসময়ই যুক্তরাজ্যের হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেট অঞ্চলের জনগণের প্রতি, বাংলাদেশের “নোংরা রাজনীতিতে” তিনি জড়াতে চান না।
প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ এমপির সাজা ঘোষণা
এর মধ্য দিয়ে দেশের আদালতে প্রথমবারের মতো কোনো ব্রিটিশ সংসদ সদস্য সাজাপ্রাপ্ত হলেন। এর আগে ২৭ নভেম্বর তিনটি মামলায় শেখ হাসিনাকে মোট ২১ বছরের সাজা, এবং এক মামলায় সজীব ওয়াজেদ জয় ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুলকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
সাজাপ্রাপ্তদের দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নিবে দুদক
রায় ঘোষণার পর দুদকের পাবলিক প্রসিকিউটর খান মুহাম্মদ মইনুল হাসান সাংবাদিকদের জানান, সাজাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা, শেখ রেহানা ও টিউলিপ সিদ্দিককে ইন্টারপোলের সহায়তায় দেশে ফেরানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “এ রায় আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। আমরা সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন আশা করেছিলাম। দুদকের সঙ্গে আলোচনার পর পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, বিভিন্ন দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে আসামিদের ফেরানোর প্রচেষ্টা চলবে। টিউলিপ সিদ্দিকের দ্বৈত নাগরিকত্বের বিষয়টিও আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যকে জানানো হবে।
মইনুল হাসান দাবি করেন, টিউলিপ সিদ্দিক ফোন কল ও বিভিন্ন অ্যাপ ব্যবহার করে শেখ হাসিনার ওপর প্রভাব খাটিয়ে প্লট বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন—প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মচারীরা আদালতে এ বিষয়ে সাক্ষ্য দিয়েছেন।