বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এখনও স্থিতিশীল হয়নি। এ কারণে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো নেওয়া সম্ভব হয়নি। বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাঁকে নেওয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স প্রস্তুত রাখা আছে। তবে বিদেশ যাত্রা সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করছে তাঁর শারীরিক সক্ষমতা এবং দীর্ঘ সময়ের বিমানযাত্রা সহ্য করার অবস্থার ওপর।
মেডিকেল বোর্ড–সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়ার ডায়াবেটিস, কিডনি, হৃদ্যন্ত্র ও ফুসফুসজনিত নানা জটিলতা একবার নিয়ন্ত্রণে এলেও আবারো বেড়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে দেখা গেছে—কিডনির সমস্যার কারণে কমে যাওয়া হিমোগ্লোবিন কিছুটা বেড়েছে, কিডনির কার্যকারিতায় সামান্য উন্নতি হয়েছে এবং ফুসফুসের অবস্থাও কিছুটা ভালো হয়েছে। তবুও তাঁর অবস্থা এখনো ঝুঁকিমুক্ত নয়।
এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিদেশ যাত্রার তারিখ একাধিকবার পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রথমে ৫ ডিসেম্বর ভোরে লন্ডনে নেওয়ার পরিকল্পনা থাকলেও তা পরিবর্তন করে ৭ ডিসেম্বর করা হয়। এরপর সেই সিদ্ধান্তও বদলে নতুন সম্ভাব্য তারিখ হিসেবে ৯ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এটিও চূড়ান্ত নয়।
চিকিৎসা–সংশ্লিষ্ট একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে বিদেশ যাত্রার পরিকল্পনা দুই দিন পিছিয়ে ৯ ডিসেম্বর করা হয়েছে, যদিও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে মেডিকেল বোর্ডের উপর। সর্বশেষ তথ্যে তাঁর অবস্থায় উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন নেই।
এভারকেয়ার হাসপাতালের বাইরে ব্রিফিংয়ে মেডিকেল বোর্ডের সদস্য ও বিএনপি নেতা এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, খালেদা জিয়া এখনও বিমান ভ্রমণের উপযোগী নন বলেই তাঁকে বিদেশে নিতে বিলম্ব হচ্ছে। তিনি বলেন, “বিদেশে নেওয়ার সব প্রস্তুতি আমাদের আছে। যখনই মেডিকেল বোর্ড নিশ্চিত হবে যে তাঁকে নিরাপদে স্থানান্তর করা সম্ভব—তখনই তাঁকে নেওয়া হবে।”
তিনি আরও জানান, নির্ধারিত সময়ে এয়ার অ্যাম্বুলেন্স কারিগরি সমস্যার কারণে না এলেও একই সময় মেডিকেল বোর্ডও মনে করেছিল যে তাঁর বিমান ভ্রমণ নিরাপদ নয়। তাই সিদ্ধান্ত স্থগিত করা হয়েছে, এবং ভবিষ্যতেও পরিস্থিতি নির্ভর করবে তাঁর শারীরিক অবস্থার ওপর।
বিএনপির কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, “ম্যাডাম অতীতেও আরও কঠিন অবস্থা থেকে ফিরে এসেছেন। আমরা আশাবাদী—ইনশাআল্লাহ এবারও তিনি সুস্থ হয়ে ফিরবেন।”