জাঁকজমকপূর্ণ সূচনার মাত্র ছয় বছর পরই ইঞ্জিন বিকল হয়ে থেমে যায় সিলেট–আখাউড়া রুটের ডেমু ট্রেন। এরপর টানা পাঁচ বছর ধরে বন্ধ আছে এই ট্রেন চলাচল। সংশ্লিষ্টদের মতে, উন্নত সেবার নাম করে কেনা এই ডেমু ট্রেনটি এখন সরকারের ৩২ কোটি টাকার অপচয়ের নজির হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৩ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর তৎকালীন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এবং রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক আনুষ্ঠানিকভাবে তিন বগির এই ডেমু ট্রেনের উদ্বোধন করেন। উভয় দিকেই ইঞ্জিন সংবলিত ট্রেনটিতে দেড়শ আসন ছিল এবং দাঁড়িয়ে যাতায়াতের জন্যও আরও দেড়শ যাত্রীর ধারণক্ষমতা ছিল। লোকাল ট্রেন হিসেবে স্বল্প দূরত্বে এটি যাত্রীদের মধ্যে দ্রুতই জনপ্রিয়তা পায়।
কিন্তু মাত্র পাঁচ বছর পর থেকেই বিভিন্ন যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিতে শুরু করে। ২০১৯ সালে ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়লে ট্রেনটি সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। পাঁচ বছর কেটে গেলেও এটি পুনরায় চালু হবে কি না—এ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছেন না সিলেট রেলওয়ের কোনো কর্মকর্তা।
২০১৩ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ে চীন থেকে মোট ২০ সেট ডেমু ট্রেন কিনেছিল, ব্যয় হয়েছিল ৬৫৪ কোটি টাকা। গড়ে প্রতিটি ট্রেনের দাম পড়ে ৩২ কোটি টাকার বেশি। রেলওয়ে নিশ্চিত করেছিল, এসব ট্রেন কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ বছর সচল থাকবে। কিন্তু পাঁচ বছর পেরোতেই এসব ডেমুতে বড় ধরনের যান্ত্রিক সমস্যা দেখা দেয়। চীনা প্রযুক্তির সঙ্গে অভ্যস্ত না হওয়ায় রেলওয়ের প্রকৌশলীরাও এগুলো মেরামতে সক্ষম হননি।
সিলেট রেলওয়ে স্টেশনের ব্যবস্থাপক মো. নুরুল ইসলাম বলেন, “একসময় ডেমু ট্রেনটি ভালোই সার্ভিস দিত। পরে ইঞ্জিন নষ্ট হয়ে যাওয়ায় চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সিলেট থেকে ঢাকায় নেওয়ার পর এটি আর ফিরে আসেনি।”