আসন্ন শারদীয় দূর্গাপূজা উদযাপন উপলক্ষে সিলেট জেলা পুলিশের উদ্যোগে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর রিকাবীবাজারস্থ সিলেট জেলা পুলিশ লাইন্স হলরুমে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।সভার শুরতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণ করা হয।
সিলেটের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট জেলা দক্ষিণ জামায়াতের আমীর অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন, মহানগর জামায়াতের সেক্রেটারী শাহজাহান আলী, সিলেট উত্তর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী জয়নাল আবেদীন, পূজা উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি এডভোকেট মৃত্যুঞ্জয় ধর ভোলা, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহফুজা আক্তার শিমুল, হিন্দু কল্যাণ ট্রাস্টের নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক গোলাম মর্তুজা সেলিম,পূজা কমিটির জেলা ও উপজেলা নেতৃবৃন্দ,জেলার সকল থানার অফিসার ইনচার্জ বৃন্দ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, সিলেট মহানগর ও জেলায় ৫৯৩টি মণ্ডপে এবার পূজা আয়োজন করা হবে। তার মধ্যে মহানগরে ১৫৩টি ও জেলায় ৪৪০টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সিলেট জেলার মধ্যে সর্বাধিক প্রতিমা বিসর্জন হয় সিলেট নগরীর চাঁদনী ঘাটের সুরমা নদীতে ও জকিগঞ্জের কাস্টম ঘাটের কুশিয়ারা নদীতে। পূজা উপলক্ষে ত্রুটিপূর্ণ সড়ক সংস্কার, সার্বক্ষনিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখা এবং প্রতিমা বিসর্জন এলাকা ও প্রতিটা পূজামণ্ডপসহ পূজারী চলাচল স্থান সমূহে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার প্রতি কঠোর নজর রাখার আহবান করা হয়।
সভায় পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে উপস্থিত সদস্যরা সমন্বয় করে হিন্দু-মুসলিমরা মিলেমিশে সম্প্রতির বন্ধন বজায় রেখে কাজ করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। জুম্মার দিনে মসজিদের ইমামদের মাধ্যমে মুসলমানদের সম্পৃক্ত করার কথা বলা হয়। তবে হিন্দু-মুসলিম ধর্মে নিষিদ্ধ আতশবাজি বা পটকা ব্যবহারে সবাইকে নিরুৎসাহিত করা হয়। আগামী ০৯ অক্টোবর (বুধবার) মহাষষ্ঠীর তিথিতে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। মহাসপ্তমী ১০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার), মহাষ্টমী ১১ অক্টোবর (শুক্রবার), মহানবমী ১২ অক্টোবর (শনিবার) ও ১৩ অক্টোবর (রোববার) প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সনাতন ধর্মালম্বীদের এই বড় ধর্মীয় উৎসব।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেট জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেন, দুর্গাপূজাকে কেন্দ্র করে কোনো দুষ্কৃতিকারী সন্ত্রাসী কর্মকান্ড পরিচালনা করলে তা কঠোরভাবে প্রতিহত করা হবে। ফেসবুকে গুজব ছড়ানো ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দ্রুত সময়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে। সবাই যার যার জায়গা থেকে কাজ করলে স্বাচ্ছন্দ্যে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা দুর্গাপূজা উদযাপন করতে পারবে।তিনি সামাজিক নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য তৃণমূলের সমাজ পরিচালনাকারী গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ ও স্টেক হোল্ডারদের সম্পৃক্ত ও সহযোগিতার আহবান জানান।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। এটিকে সবাই মিলে গড়ে তুলবো। তিনি সভায় আগত সবাইকে ধন্যবাদ জানান এবং সবার সহযোগিতায় সফলভাবে পূজা উদযাপনের প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমন্বয় সভায় রাজনৈতিক নেতৃবর্গ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কবৃন্দ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কেন্দ্রীয় কমিটি, বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ, সিলেট জেলা ও মহানগর ইমাম সমিতির নেতৃবৃন্দ, সিলেট মহানগর ও কেন্দ্রীয় কমিটি এবং উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির নেতাদের পাশাপাশি সিভিল সার্জন, বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, র্যাব, বিজিবি, আনসার, ফায়ার সার্ভিস ও পিডিবির প্রতিনিধি এবং সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।