আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস ও জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে
প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সরকারের
গৃহীত পদক্ষেপ সমূহ শীর্ষক কথিকা
॥ দেওয়ান সালামত রাজা চৌধুরী ॥
প্রতি বছর ৩ ডিসেম্বরকে আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। ১৯৯২ সাল থেকে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ ও তাদের সকল প্রকার অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে গণসচেতনতা বৃদ্ধিকরণে বিশ্বের অন্যান্য দেশের ন্যায় আমাদের বাংলাদেশেও যথাযথ মর্যাদায় এ দিবসটি আজ পালন করা হচ্ছে। এ দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করা হয়েছে। এসব কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসমূহ।
আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার এবং বেসরকারি টেলিভিশন ও বেতারে এ দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা সমূহ প্রচার করে। এছাড়াও স্থানীয় ও জাতীয় পত্র-পত্রিকা সমূহে বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ হয়। ৩৩তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২৬তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবসের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো-
“অন্তর্ভুক্তিমূলক টেকসই ভবিষ্যৎ বিনির্মাণ
বিকাশিত নেতৃত্বে এগিয়ে যাবে প্রতিবন্ধী জনগণ।”
প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরা আমাদের পরিবার, সমাজ, তথা এ রাষ্ট্রেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা অন্য কোনো গ্রহ থেকে উড়ে এসে জুড়ে বসেনি। বরং পৃথিবী নামক গ্রহেরই বাসিন্দা। তাদেরকে অবহেলা বা করুনা করার কোনো সুযোগ নেই। প্রতিবন্ধীদেরকে উপযুক্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দেশের সম্পদে পরিণত করা সম্ভব। প্রয়োজন শুধু সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন। তাদের উন্নয়ন ছাড়া দেশের সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাদেরকে উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় সম্পৃক্ত করণে সরকার বেশকিছু বাস্তবমুখী পদক্ষেপসমূহ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা উপবৃত্তি ও সুদবিহীন ঋণ প্রদান। এছাড়াও প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন-২০১৩, নিউ্েরা ডেভেলপমেন্টাল আইন-২০১৩ এবং প্রতিবন্ধীদের জরীপ সরকারের একটি চলমান কার্যক্রম। যা সরকারের সাহসী পদক্ষেপও বলা যায়। প্রতিবন্ধীদের সমস্যা শুধু সরকারের একার পক্ষে সমাধান করা সম্ভব নয়। প্রয়োজন সকলের আন্তরিক সহযোগিতা। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে দেশের সুশীল সমাজসহ সবাইকে সহযোগিতার হাত বাড়াতে হবে। কাউকে পেছনে রেখে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়। সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। তাহলেই সোনার বাংলা সমৃদ্ধশালী হবে।
“রইবে না কেউ ঘরের কোণে
প্রত্যাশা সবার তরে।”
গণসচেতনতা বৃদ্ধি করাই আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবসের মূল লক্ষ্য।
লেখক- দেওয়ান সালামত রাজা চৌধুরী,
সভাপতি- সুরমা অন্ধকল্যাণ সমিতি সিলেট