বদর যুদ্ধে সন্তানের শাহাদাতের খবরে আনন্দিত হয়েছিলেন যে মা
নশ্বর এ পৃথিবীতে এক মুঠো আশার আলো সন্তান। নাড়িছেঁড়া ধন। জীবনের সার্থকতা। সন্তান একটুখানি ‘উহ’ বললে কলজে ফেটে আসে মায়ের। শত দুঃখ যাতনার মাঝেও সন্তানকে বুঝতে দেন না মা কিছুই অথচ মহান আল্লাহর রাস্তায় সন্তান জীবন দেয়ায় হেসে উঠেছিলেন এক মা। নিজেকে ধন্য মনে করেছিলেন তিনি।
হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত হারেসা ইবনে সুরাকা (রা.) বদর যুদ্ধের দিন শহীদ হয়েছেন। তিনি সেদিন পর্যবেক্ষক দলে ছিলেন। অজ্ঞাত এক তীর এসে তার শরীরে লাগলে তিনি শহীদ হন।
শাহাদাতের পর তার মা এসে বললেন,
হে আল্লাহর রসুল, হারেসার খবর বলুন। যদি সে বেহেশতে প্রবেশ করে তবে আমি ধৈর্য ধারণ করব। অন্যথায় মহান আল্লাহ দেখবেন, আমি কী করি?
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তোমার ধ্বংস হক! তুমি কি পাগল হয়েছো! তা এক বেহেশত নয় বরং আট বেহেশত। তোমার ছেলে সর্বোচ্চ জান্নাত লাভ করেছে। (বিদায়াহ)
অপর রেওয়ায়েতে আছে তার মা বললেন, যদি সে বেহেশতে প্রবেশ করে আমি ধৈর্য ধারণ করব। আর যদি তা না হয়, তবে আমি তার জন্য কেঁদে আকুল হবো।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উম্মে হারেসা, বেহেশতের ভেতর অনেক বেহেশত রয়েছে। আর তোমার ছেলে সর্বোচ্চ ফেরদাউস লাভ করেছে।
অপর আরেক রেওয়ায়েতে আছে, রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
হে উম্মে হারেসা, তা একটি বেহেশত নয়, বরং অনেক বেহেশত। আর সে সর্বোচ্চ ফেরদাউসে পৌঁছেছে। তার মা বললেন, তবে আমি ধৈর্য ধারণ করব। (কানয)
অপর রেওয়ায়েতে বর্ণিত হয়েছে, হারেসার মা বললেন, হে আল্লাহর রসুল, যদি সে বেহেশতে প্রবেশ করে তবে আমি কাঁদবো না, দুঃখ করব না। আর যদি সে দোজখে গিয়ে থাকে তবে যতদিন দুনিয়াতে বেঁচে থাকব তার জন্য কাঁদবো।
রসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হে উম্মে হারেসা, তা একটি বেহেশত নয় বরং অনেক বেহেশতের মধ্যে একটি বেহেশত। আর হারেসা সর্বোচ্চ ফেরদাউসে পৌঁছেছে। এ কথা শুনে হারেসার মা হাসতে হাসতে ফিরে গেলেন এবং বলতে লাগলেন, বাহ, বাহ হে হারেসা! (কানয)
আহ! শাহাদাতের প্রতি কতই না আকৃষ্ট! শাহাদাতের মৃত্যু কতই না কাম্য! সন্তানের মৃত্যু ঠুনকো বিষয়। শাহাদাতই মুখ্য। এরাই তো ইসলামের মর্মবাণী বুঝতে পেরেছেন অনুধাবন করেছেন পরকালীন সফলতা!