সর্বশেষ সরকারি পরিসংখ্যানে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের নিট অভিবাসন আবারও কোভিড-পূর্ব অবস্থার কাছাকাছি নেমে এসেছে। দেশে আগমনকারী ও দেশ ছাড়ার সংখ্যার পার্থক্যের ভিত্তিতে নির্ধারিত এই নিট অভিবাসনে দীর্ঘদিন পর বড় ধরনের হ্রাস দেখা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, সাম্প্রতিক নীতি পরিবর্তন ও কঠোর অভিবাসন ব্যবস্থাপনার ফলেই এ প্রবণতা তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামগ্রিক অভিবাসনের চিত্রে একটি পরিষ্কার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। নতুন আগমনের সংখ্যা কমতে থাকলেও দেশত্যাগের পরিমাণ কিছুটা বেড়েছে, ফলে মোট নিট হিসাব উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে। বিশেষ করে উচ্চ দক্ষতা, শিক্ষা ও পারিবারিক ভিসা—এই তিন ক্যাটাগরিতেই গত বছরের তুলনায় বড় পতন দেখা যাচ্ছে।
অবৈধ অভিবাসনের ক্ষেত্রেও অনুরূপ প্রবণতা লক্ষণীয়। ছোট নৌকায় করে আসা অনিয়মিত প্রবেশকারীর সংখ্যা আগের চেয়ে কমেছে। সীমান্তে কঠোর নজরদারি, সমুদ্রপথে টহল বৃদ্ধি এবং ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ অভিযান জোরদার করার ফলে এই কমতি ঘটেছে বলে অভিবাসন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
ভিসা অনুমোদনের হালনাগাদ তথ্যে দেখা যাচ্ছে, কাজ, পড়াশোনা ও পারিবারিক ভিসা—সব ক্ষেত্রেই আবেদন অনুমোদন কমেছে। বিশেষ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের ভিসা নীতিতে কড়াকড়ি এবং ডিপেন্ডেন্ট ভিসা সীমিত করায় উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়েছে। ব্যবসায়িক ভিসার ক্ষেত্রেও সামান্য পতন লক্ষ্য করা গেছে, যা সরকারের উচ্চ মজুরি–নিম্ন অভিবাসন নীতির প্রতিফলন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
নিট অভিবাসনের এই কমে যাওয়া বর্তমান নীতির সাফল্য নির্দেশ করে কি না, তা এখন রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। সরকার এই পরিবর্তনকে ইতিবাচক ফল হিসেবে তুলে ধরলেও বিশ্লেষকেরা সতর্ক করে বলছেন—সংখ্যা কমা একমাত্র মানদণ্ড হতে পারে না; বরং এর অর্থনীতি, শ্রমবাজার ও আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী নীতির ওপর প্রভাব গভীরভাবে বিশ্লেষণ করাই জরুরি।