সৌদি আরবে এখনো কাগজে-কলমে মদ্যপান ও মদ বিক্রি নিষিদ্ধ থাকলেও, বাস্তবে এ নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেখা যাচ্ছে। গত বছর প্রথমবারের মতো শুধুমাত্র অমুসলিম কূটনীতিকদের জন্য রাজধানী রিয়াদের কূটনৈতিক এলাকায় একটি মদের দোকান চালু হয়। এবার সেই পরিসর আরও বিস্তৃত করেছে দেশটির সরকার।
সম্প্রতি অমুসলিম, উচ্চ আয়ের বিদেশি নাগরিকদেরও মদ কেনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এর ফলে রিয়াদের একমাত্র অনুমোদিত মদের দোকানের সামনে এখন প্রায়ই লম্বা গাড়ির সারি দেখা যাচ্ছে।
এএফপি ও নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মদ কিনতে হলে কিছু নির্দিষ্ট শর্ত পূরণ করতে হবে—ক্রেতাকে অবশ্যই অমুসলিম হতে হবে, বিদেশি নাগরিক হতে হবে এবং তার মাসিক আয় কমপক্ষে ৫০ হাজার রিয়াল (প্রায় ১৩,৩০০ ডলার) হতে হবে।
রিয়াদের কূটনৈতিক অঞ্চলের দোকানটি সৌদির একমাত্র অনুমোদিত লিকার শপ। সেখানে শুধু মদ কেনা যায়, খাওয়ার সুযোগ নেই। আগে এটি শুধুই বিদেশি কূটনীতিকদের জন্য উন্মুক্ত ছিল, তবে এখন প্রিমিয়াম ভিসাধারী ধনী বিদেশিরাও সেখান থেকে মদ কিনতে পারছেন। গত এক মাস ধরে এই সুবিধা কার্যকর হয়েছে এবং বর্তমানে সৌদিতে প্রিমিয়াম ভিসাধারীর সংখ্যা ১২,৫০০ জনেরও বেশি।
দোকান থেকে মদ কেনা এক বিদেশি এএফপিকে জানান, “আমরা শুরুতে বিশ্বাসই করতে পারিনি যে সৌদিতে মদ বিক্রি শুরু হয়েছে। যাচাই-বাছাই শেষে যখন আমরা মদ কিনতে পারলাম, সত্যিই অবাক হয়েছিলাম।” আরেকজন বলেন, “বন্ধুরা কেউ বিষয়টি বিশ্বাস করতে চায়নি। পরে যখন মদ কিনে দেখালাম, সবাই বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেল।”
ইসলামে মদ নিষিদ্ধ হলেও ১৯৫২ সাল পর্যন্ত সৌদিতে মদের দোকান ছিল। ওই বছরই দেশটি পুরোপুরি মদ বিক্রি ও সেবন নিষিদ্ধ করে। তবে ২০১৭ সালে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান ক্ষমতায় আসার পর থেকে অর্থনৈতিক সংস্কারের অংশ হিসেবে বিভিন্ন নীতিতে পরিবর্তন আসতে থাকে। প্রিমিয়াম ভিসাধারীদের জন্য মদের দোকান উন্মুক্ত করাও সেই সংস্কার পরিকল্পনার একটি অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
এক সরকারি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ২০২৬ সালের মধ্যে জেদ্দা ও দাহরান শহরেও আরও দুটি মদের দোকান খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।
সূত্র: এএফপি